[email protected] সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
১ পৌষ ১৪৩২

সিএনএনের প্রতিবেদন

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে চায় বাংলাদেশ, বড় বাধা ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০২৫ ১২:৫৪ পিএম

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুপস্থিত অবস্থায়

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনের সময় ছাত্রদের বিরুদ্ধে সহিংসতার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে এই রায় দেওয়া হয়। তবে রায় কার্যকরে বড় বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে ভারতকে—কারণ শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে আশ্রয়ে আছেন এবং তাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে দিল্লি এখনো সম্মতি দেয়নি।

কেন ভারত বাধা?

ভারত–বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তিতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় কাউকে ফেরত না পাঠানোর নীতি রয়েছে। ভারতের কূটনীতিকরা বলছেন, দিল্লি সম্ভবত এই মামলাটিকে ‘রাজনৈতিক’ হিসেবে বিবেচনা করতে পারে। সেই ক্ষেত্রে ভারত তাকে পাঠাতে বাধ্য নয়।

হাসিনার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

তিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে। ১৯৭৫ সালের সামরিক অভ্যুত্থানে পরিবারের অধিকাংশ সদস্য নিহত হওয়ার পর তিনি নির্বাসনে যান। পরবর্তী দশকগুলোতে ফিরে এসে রাজনীতির কেন্দ্রে উঠে আসেন এবং তিনবার প্রধানমন্ত্রী হন।

তার দীর্ঘ শাসনে অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটলেও একই সময়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিরোধী দলের ওপর দমননীতি ও গণতান্ত্রিক সংকোচনের সমালোচনার মুখে পড়েন।

ছাত্র আন্দোলন ও ক্ষমতা হারানো

২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর অবস্থানে ব্যাপক হতাহত হয়। আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনা ওঠে, এবং আন্দোলনের চাপেই সরকার পতন ঘটে। এরপর তিনি ভারতে চলে যান।

মৃত্যুদণ্ডের রায়

আদালত বলেছে, তিনি আন্দোলন দমনে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা রায়কে আংশিক স্বস্তি হিসেবে দেখছেন।

বাংলাদেশ সরকার এখন তাকে ফেরত চাইছে, কিন্তু ভারত এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। আইনি প্রক্রিয়ায় এখনও আপিলের সুযোগ রয়েছে—দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক আদালত পর্যন্ত।

আগামী দিনের রাজনীতি

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগে এই রায় রাজনৈতিক অস্থিরতাকে আরও জটিল করেছে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, নেতৃত্ব ছিন্নভিন্ন; অন্যদিকে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল নতুন রাজনৈতিক ভারসাম্য তৈরির চেষ্টা করছে। নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনুস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার চ্যালেঞ্জে রয়েছে।

এখন প্রশ্ন—হাসিনার পতন কি অতীতের একটি বিতর্কিত অধ্যায়ের সমাপ্তি, নাকি নতুন অনিশ্চয়তার সূচনা?

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর