মিয়ানমারের জান্তা সরকার চলমান জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং চলতি বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, দেশটির সামরিক সরকার সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বে একটি ১১ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। যদিও এখনো নির্ধারিত তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এমআরটিভি-তে প্রচারিত খবরে জানানো হয়, সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং তিনিই নির্বাচন তত্ত্বাবধান করবেন। একইসঙ্গে তিনি সামরিক বাহিনীর প্রধান (কমান্ডার-ইন-চিফ) হিসেবেও বহাল থাকবেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নির্বাচনটি হবে ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর প্রথম জাতীয় নির্বাচন। তবে এই নির্বাচন ঘিরে কঠোর আইন পাস করেছে জান্তা সরকার, যা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
দেশটির জান্তা সরকার নতুন একটি আইন পাস করেছে, যার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করলে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। ‘প্রোটেকশন অব মাল্টিপার্টি ডেমোক্রেটিক ইলেকশন ফ্রম অবস্ট্রাকশন, ডিসরাপশন অ্যান্ড ডেস্ট্রাকশন’ শীর্ষক এই আইনটি ২৯ জুলাই মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় দৈনিক দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট-এ প্রকাশের পর থেকে কার্যকর হয়েছে।
এই আইনে বলা হয়েছে, নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা, উসকানিমূলক বক্তব্য, লিফলেট বিতরণ, প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ আয়োজন অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে এই অপরাধের জন্য ৩ থেকে ৭ বছর এবং কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
এছাড়া, ব্যালট পেপার নষ্ট করা, ভোটার, প্রার্থী বা কর্মকর্তাদের ভয় দেখানো কিংবা নির্বাচন কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। নির্বাচনী সহিংসতায় কেউ নিহত হলে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) সরকারকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে। জান্তা সরকার দাবি করে, ২০২০ সালের নির্বাচন ছিল জালিয়াতিপূর্ণ। অভ্যুত্থানের পর থেকে সু চি ও এনএলডির হাজারো নেতাকর্মীকে আটক করা হয়, যাদের অনেকে এখনো কারাগারে রয়েছেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: