পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন এবং এতে ভারতকে অংশগ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছেন।
শনিবার পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাকুলে এক প্যারেড অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এ প্রস্তাব দেন। খবর জিও নিউজ উর্দুর।
কাশ্মীর প্রসঙ্গে বক্তব্য দিতে গিয়ে শাহবাজ শরিফ বলেন, "কাশ্মীর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি বিতর্কিত অঞ্চল। এখানে বসবাসকারী জনগণকে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার দিতে হবে।" তিনি অভিযোগ করেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত কোনও ধরনের প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে পেহেলগামের ঘটনার জন্য দোষারোপ করছে এবং একের পর এক ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে। পাকিস্তান যে কোনো পক্ষপাতহীন, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তে অংশ নিতে প্রস্তুত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ভারতের পানি আগ্রাসন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "পানি আমাদের জীবনরেখা। এ বিষয়ে কোনো আপস করা যাবে না। পাকিস্তান তার পানি সম্পদ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। যদি কেউ দুঃসাহস দেখায়, তবে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির মতো উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।"
এদিকে, মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ অভিযোগ করেন, পেহেলগামের হামলার ঘটনাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি বাতিলের পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং কোনো তদন্ত বা প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, "আমরা চাই না এই অঞ্চলে যুদ্ধের আগুন ছড়িয়ে পড়ুক। কারণ, তা পুরো অঞ্চলের জন্য মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনবে।"
গত ২২ এপ্রিল (মঙ্গলবার) ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন শহর পেহেলগামে এক সশস্ত্র হামলায় এক নেপালি নাগরিকসহ ২৬ জন নিহত হন। ভারত সরকার হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে। তবে ইসলামাবাদ এই অভিযোগ তীব্রভাবে অস্বীকার করে এবং ঘটনাটিকে ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ বলে উল্লেখ করে।
হামলার পর ভারতীয় কর্তৃপক্ষ প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে এবং সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতসহ একাধিক পদক্ষেপ নেয়। এর পাল্টা হিসেবে পাকিস্তানও ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিল, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিত এবং ভারতের বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধের মতো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে।
এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের ফলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, যা সামরিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: