[email protected] রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫
১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রের ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তাব পেলেন বাংলাদেশের মীম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২ আগষ্ট ২০২৫ ৯:২৬ পিএম

সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছেন চট্টগ্রামের মুমতাহিনা করিম মীম।

এর মধ্যে অন্যতম হল যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা হেনড্রিক্স কলেজ, যেখান থেকে তিনি বিশ্ববিখ্যাত হেইস মেমোরিয়াল স্কলারশিপ অর্জন করেছেন। এটি একটি সম্পূর্ণ খরচ বহনকারী (ফুল-রাইড) স্কলারশিপ, যা প্রতিবছর সারা বিশ্বের মাত্র চারজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে প্রদান করা হয়। এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের দেশ থেকে এই সম্মানজনক স্কলারশিপ পাওয়া একমাত্র শিক্ষার্থী মীম।

এই অসাধারণ সাফল্য অর্জন করায় গত শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেলে মীমকে সংবর্ধনা প্রদান করে তার নিজ গ্রাম রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা বড়বাড়ি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বড়বাড়ির বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সালাম, আরিফুল হাসান চৌধুরী মুরাদ, মঞ্জুর হাসান চৌধুরী, খালেদ হোসেন চৌধুরী রাসেল, নাজিম উদ্দীন চৌধুরী সুজা, করিম চৌধুরী, মো. রাহাত, মো. শিফু, সোহেল রানা প্রমুখ।

প্রযুক্তি ও প্রোগ্রামিংয়ের প্রতি গভীর আগ্রহী মীম জানান, তিনি হেনড্রিক্স কলেজেই কম্পিউটার সায়েন্সে (ডুয়েল-ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রাম) স্নাতক সম্পন্ন করবেন। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবনা ও স্কলারশিপ মিলিয়ে তার প্রাপ্ত অর্থমূল্য প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। আগামী ৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে তার।

মীমের বাবা আব্দুল করিম চৌধুরী একজন ব্যবসায়ী, মা ইয়াসমিন আকতার একজন গৃহিণী। তিনি চট্টগ্রাম নগরের অংকুর সোসাইটি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং কাপাসগোলা মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ছোটবেলায় একবার বাবা-মায়ের সঙ্গে বিদেশ সফর করার পর থেকেই তার মনে বিদেশে পড়াশোনার স্বপ্ন জন্ম নেয়।

মীমের সাফল্যের পেছনে রয়েছে নিরলস পরিশ্রম ও অদম্য ইচ্ছাশক্তি। সপ্তম শ্রেণিতে নিজেই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেন, নবম শ্রেণিতে গড়ে তোলেন ৬৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রোগ্রামিং ক্লাব। করোনাকালেও থেমে থাকেননি—বাড়িতেই স্থাপন করেন একটি মিনি রোবটিক্স ল্যাব এবং ‘কিবো’ নামে একটি রোবট তৈরি করেন, যা খাবার পরিবেশন করতে সক্ষম।

জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার জিতেছেন তিনি। তার সহশিক্ষা কার্যক্রমে ছিল বিতর্ক, গান, চিত্রাঙ্কন, বিজ্ঞানমেলা ও প্রোগ্রামিং—যা তাকে গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে বহুমাত্রিকভাবে।

নিজের অর্জন প্রসঙ্গে মীম বলেন,
“বিদেশে পড়াশোনা আমার ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল। সেটি বাস্তবায়ন করতে কঠোর পরিশ্রম করেছি। সহশিক্ষা কার্যক্রম আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। মা-বাবা ও শিক্ষকদের সমর্থনে আজ আমি এই জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছি।”

মীমের এই অর্জন শুধু তার নিজ গ্রামের নয়, বরং দেশের লাখো শিক্ষার্থীর অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে, যারা উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখছে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর