ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) রেজিস্ট্রার দপ্তরের একটি স্থায়ী শূন্যপদে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কিংবা পরীক্ষার আয়োজন ছাড়াই ফিরোজ শাহ নামের এক কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে তিনি উপাচার্যের প্রটোকল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ঘটনা নিয়ে সমালোচনা চলছে।
গত বছরের নভেম্বরে উপাচার্যের নির্বাহী আদেশে উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অফিস সহায়ক ফিরোজ শাহকে প্রশাসন-৮ দপ্তরের উচ্চমান সহকারী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
সমালোচকরা বলছেন, উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান তাঁর পছন্দের ব্যক্তিকে সুবিধা দিতে এ উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে অধ্যাপক নিয়াজ দাবি করেছেন, তিনি ফিরোজকে শুধু বদলি করেছেন; নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাঁর জানা নেই।
ঢাবিতে উচ্চমান সহকারী পদটি তৃতীয় শ্রেণির সমমানের। সাধারণত এ ধরনের পদের জন্য ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। চাকরিপ্রত্যাশী হৃদয় সাখাওয়াত এ প্রসঙ্গে বলেন, "অনেক পড়াশোনা করেও সরকারি চাকরিতে অনিশ্চয়তা রয়ে যায়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনিয়ম হতাশাজনক।"
জানা যায়, গত বছরের ২৭ আগস্ট উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক নিয়াজ আহমেদ খান উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর তিনি নিজ বিভাগের অফিস সহায়ক ফিরোজ শাহকে বদলি করে প্রটোকল অফিসারের দায়িত্ব দেন। পরে, প্রশাসন-৮ দপ্তরের উচ্চমান সহকারী পদে ফিরোজের নিয়োগের জন্য উপাচার্যের কাছে তদবির করা হয়। উপাচার্যের সম্মতিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে আলোচনা করে তাঁর নিয়োগ চূড়ান্ত করেন।
তবে উপাচার্যের পিএস আব্দুর রহমান নিশাত এবং সহকারী রেজিস্ট্রার মনিরুজ্জামান এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁরা জানান, এ বিষয়ে তাঁরা অবগত নন।
প্রশাসন-৮ দপ্তরের কর্মকর্তা গোলাম মোরশেদ জানান, "উপাচার্য চাইলে নির্বাহী আদেশে এমন নিয়োগ দিতে পারেন। এতে কোনো বিধি লঙ্ঘিত হয়নি।"
সূত্র জানায়, নিয়োগের বিষয়টি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হক বিদিশার দপ্তরে পাঠানো হয়নি। সরাসরি উপাচার্যের কার্যালয় থেকে প্রক্রিয়াটি পরিচালিত হয়।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনশী শামস উদ্দীন আহমেদ জানান, "ফিরোজ শাহ অফিস সহায়ক হিসেবে উচ্চমান সহকারীর সমমানের বেতন পেতেন। তাই কর্তৃপক্ষের ইচ্ছায় তাঁকে উচ্চমান সহকারী হিসেবে স্থানান্তর করা হয়েছে।"
এ বিষয়ে ফিরোজ শাহ বলেন, "কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।" উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, "আমার দায়িত্ব শেষ হলে ফিরোজ উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে ফিরে যাবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: