বিএসসির আরপিওর অর্থ ব্যয়ে ১৪ বছর, সুদ আয় ২৩৪ কোটি

রাষ্ট্রায়ত্ত জাহাজ পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন

(বিএসসি) পুঁজিবাজার থেকে ২০১১ সালে রিপিট পাবলিক অফার (আরপিও) ছাড়ার মাধ্যমে প্রায় ৩১৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর পর, চলতি বছরের অক্টোবরে সেই তহবিলের সম্পূর্ণ অর্থ ব্যয় সম্পন্ন করেছে সংস্থাটি।

এই দীর্ঘ সময়ে আরপিওর অব্যবহৃত অর্থ ব্যাংকে আমানত হিসেবে সংরক্ষণ করে বিএসসি ২৩৪ কোটির বেশি টাকা সুদ আয় করেছে। সংস্থার কর্মকর্তাদের মতে, এই সুদ থেকে পাওয়া অর্থ জাহাজ পরিচালনা ও সংশ্লিষ্ট ব্যয় মেটাতে ব্যবহার করা হয়েছে।

আরপিও তহবিল ব্যবহারের অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিএসসির মোট ৩১৩ কোটি ৭০ লাখ টাকার মধ্যে প্রায় ২৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা অব্যবহৃত ছিল। পরে অক্টোবরে অবশিষ্ট অর্থও ব্যয় করা হয়।

তথ্য অনুযায়ী, ছয়টি জাহাজ ক্রয় প্রকল্পে সর্বোচ্চ ২৩৬ কোটি ৪১ লাখ টাকার বেশি অর্থ ব্যয় করেছে বিএসসি। এছাড়া ভবন নির্মাণে প্রায় ৫৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা এবং আরপিও সংক্রান্ত খরচ বাবদ প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। ব্যাংকে রাখা আরপিও তহবিল থেকে অর্জিত মোট সুদের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৩৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার বেশি, যেখানে সুদের হার ছিল ৬ থেকে ১০ শতাংশ।

কোম্পানি সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রচলিত নীতিমালায় আরপিওর মূল অর্থ মূলধনি খাতে ব্যয়ের বাধ্যবাধকতা থাকলেও, সুদ থেকে অর্জিত অর্থ কোন খাতে ব্যবহার করতে হবে—সে বিষয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশনা নেই। সেই কারণে সুদের অর্থ বিএসসি জাহাজ পরিচালন ব্যয়ে ব্যয় করেছে। এ বিষয়ে আসন্ন বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেওয়া হবে।

এদিকে, ২০২৪–২৫ অর্থবছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার সুপারিশ করেছে বিএসসির পরিচালনা পর্ষদ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ১০ পয়সা, যা আগের অর্থবছরে ছিল ১৬ টাকা ৩৭ পয়সা। ৩০ জুন ২০২৫ শেষে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) নির্ধারিত হয়েছে ১০৪ টাকা ৮৪ পয়সা।

ঘোষিত লভ্যাংশসহ অন্যান্য এজেন্ডায় বিনিয়োগকারীদের অনুমোদন নিতে আগামী ২২ ডিসেম্বর এজিএম আয়োজন করবে বিএসসি। এ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ ডিসেম্বর।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সর্বশেষ লেনদেনে বিএসসির শেয়ারের দাম ছিল ১০৭ টাকা। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ৮২ টাকা ৬০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১২৭ টাকার মধ্যে ওঠানামা করেছে।