গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসা থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) বহিষ্কৃত কেন্দ্রীয় নেতা জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গ্রেপ্তার এড়াতে অপু প্রতিনিয়ত অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন। একপর্যায়ে রাজধানী ছেড়ে গা-ঢাকা দেওয়ার পরিকল্পনাও করেন। তবে গোপীবাগে এক বন্ধুর বাসা থেকে বের হওয়ার সময় প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে শুক্রবার (১ আগস্ট) ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপির মিডিয়া শাখার উপকমিশনার তালেবুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারের পর অপুকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে নিয়ে মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডির একাধিক বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ।
অভিযানে চাঁদাবাজির বিভিন্ন আলামত উদ্ধার হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
তদন্তে জানা গেছে, গত ১৭ জুলাই অপু ও আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রিয়াদ গুলশানে শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
পরিচয় দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী হিসেবে। তারা দাবি করেন, টাকা না দিলে জাফরকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ বলে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন। পরে ১০ লাখ টাকা নিয়ে সেদিন বাসা ত্যাগ করেন তারা।
চাঁদার টাকার একটি অংশ দিয়ে অপু ইয়ামাহা এফজেড-এক্স মোটরসাইকেল কেনেন। পরদিন ফের বাসায় গিয়ে বাকি টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
তৃতীয় দফায় ২৬ জুলাই তারা ১৫-২০ জন সহযোগী নিয়ে আবারও বাসায় হানা দেন। এসময় আতঙ্কিত হয়ে সিদ্দিক আবু জাফর ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ এসে অভিযান চালায়।
ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়—রিয়াদ, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, ইব্রাহিম হোসেন মুন্না এবং এক অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন জাফর। মামলায় জানে আলম অপু পলাতক ছিলেন।
রিমান্ডে থাকা রিয়াদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তার দুটি ভাড়া বাসা থেকে ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ও প্রায় ৩ কোটি টাকার চেক উদ্ধার করেছে।
তদন্তে চাঁদাবাজির বিস্তারিত চক্র উন্মোচিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এসআর
মন্তব্য করুন: