[email protected] সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

গোপনে শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীর জামিন, শুরু বিতর্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ৫:১২ পিএম

সংগৃহীত ছবি

চট্টগ্রামের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ এবং তার স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না একাধিক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসার পর ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র জানায়, সাজ্জাদ হোসেন তিনটি হত্যা মামলায় এবং তার স্ত্রী তামান্না চারটি মামলায় জামিন পেয়েছেন। সাজ্জাদের বিরুদ্ধে মোট ১৯টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে ১০টি হত্যা মামলা। এসব মামলার মধ্যে চট্টগ্রামের জোড়া খুন এবং প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী বাবলা হত্যাকাণ্ডও রয়েছে। অন্যদিকে, তামান্নার বিরুদ্ধেও একাধিক হত্যা মামলাসহ মোট আটটি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।

আইন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, হাইকোর্ট থেকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুই দিনে চারটি পৃথক হত্যা মামলায় জামিন পান এই দম্পতি। তবে জামিন পাওয়ার পরপরই সেই জামিননামা চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট আদালত বা কারাগারে পাঠানো হয়নি। বরং দীর্ঘ সময় ধরে তা গোপন রাখা হয়, যা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

সূত্রের দাবি, পুলিশ, প্রশাসন ও গণমাধ্যমের নজর এড়াতে জামিন কার্যকর করার ক্ষেত্রে নানা কৌশল গ্রহণ করা হয়। তামান্নার ক্ষেত্রে নারী আসামি হিসেবে সহানুভূতি পাওয়ার জন্য চারটি মামলাতেই তার নাম এক নম্বর আসামি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। অপরদিকে সাজ্জাদের নাম রাখা হয় আবেদনপত্রের দ্বিতীয় ও তৃতীয় নম্বরে।

আইন অনুযায়ী, হাইকোর্ট থেকে জামিন আদেশ দেওয়ার পর সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে সেই আদেশ কারাগারে পৌঁছানোর কথা। এছাড়া, ভয়ংকর বা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষ চাইলে চেম্বার জজ আদালতে জামিন স্থগিতের আবেদন করতে পারে। তবে এই ঘটনায় সে ধরনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ সুমনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ চারটি মামলাতেই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাজ্জাদ ও তামান্নাকে জামিন দেন। ১৫ ও ২২ সেপ্টেম্বর জামিন আদেশ দেওয়া হলেও হাইকোর্টের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. ইউসুফ আলী যথাক্রমে ১৮ সেপ্টেম্বর ও ৫ অক্টোবর আদেশে স্বাক্ষর করেন। পরে সেই জামিননামা প্রায় আড়াই মাস পর গত ৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে পৌঁছে।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট চান্দগাঁও থানার দোকান কর্মচারী শহিদুল ইসলাম হত্যা মামলায় ১৫ সেপ্টেম্বর সাজ্জাদ ও তামান্নাকে জামিন দেওয়া হয়। একই দিনে পাঁচলাইশ থানার ওয়াসিম আকরাম হত্যা মামলায়ও এই দম্পতিসহ তিনজন জামিন পান। পরবর্তীতে ২২ সেপ্টেম্বর পাঁচলাইশ থানার দোকান কর্মচারী মো. ফারুক হত্যা এবং আফতাব উদ্দিন তাহসীন হত্যা মামলাতেও তারা জামিন লাভ করেন।

সাজ্জাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, “সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী চারটি মামলায় জামিন পেয়েছেন এবং জামিননামা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে হাইকোর্ট থেকে জামিন আদেশ চট্টগ্রামে পৌঁছাতে কেন দেরি হয়েছে, সে বিষয়ে আমি অবগত নই।”

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার শাহ সৈয়দ শরীফ জানান, “গত সপ্তাহে আমরা সাজ্জাদ হোসেন ও তার স্ত্রী তামান্না শারমিনের জামিননামা পেয়েছি। এর মধ্যে তিনটি সাজ্জাদের নামে এবং চারটি তামান্নার নামে। পরে সেগুলো সংশ্লিষ্ট কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে বর্তমানে ১৯টি মামলা রয়েছে "।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর