[email protected] রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫
১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে পদ্মা নদী থেকে দুই বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২ আগষ্ট ২০২৫ ৮:৫২ পিএম

সংগৃহীত ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী পদ্মা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় দুই বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

নিহতদের একজনের শরীরে অ্যাসিডে ঝলসানোর চিহ্ন পাওয়া গেছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে চরম উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

শনিবার (২ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে বিজিবির মাসুদপুর বিওপির একটি টহল দল চৌধুরী স্মরণ সীমান্ত এলাকার পদ্মা নদী থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে। নিহতরা হলেন— মো. শফিকুল ইসলাম (৪৫), পিতা সেরাজুল ইসলাম; এবং মো. সেলিম (৩৫), পিতা মৃত মর্তুজা। দুজনই শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের তারাপুর হঠাৎপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মরদেহ দুটি চৌধুরী স্মরণ সীমান্ত পিলার ৪/২-এস থেকে প্রায় ২.৫ কিলোমিটার বাংলাদেশের ভেতরে পদ্মা নদীতে ভাসছিল। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে শফিকুল ইসলামের শরীর অ্যাসিডে ঝলসানো ছিল, যা দেখে স্থানীয়রা শঙ্কিত ও বিস্মিত হন।

নিহত শফিকুল ইসলামের ভগ্নিপতি এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য সমির উদ্দিন জানান, “বৃহস্পতিবার গরু আনার উদ্দেশ্যে শফিকুল ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। তারপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। শনিবার দুপুরে নদীতে মরদেহ ভাসতে দেখে আমরা শনাক্ত করি। তার শরীরের অবস্থা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, এমন নিষ্ঠুরতা জীবনে দেখিনি।

এ ঘটনার পর সীমান্তবর্তী এলাকাজুড়ে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এখন আগের কৌশল থেকে সরে এসে নির্যাতনের মাধ্যমে মৃত্যু নিশ্চিত করে মরদেহ নদীতে ফেলে দিচ্ছে, যেন হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ মুছে ফেলা যায়।

 

৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু জানান, “মরদেহ উদ্ধারের পর তা শিবগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হতে আমরা তদন্ত করছি।”

 

প্রসঙ্গত, মাত্র কয়েকদিন আগেই একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার মনোহরপুর সীমান্ত দিয়ে গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন সৈয়বুর আলী নামে এক বাংলাদেশি নাগরিক। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাকা ইউনিয়নের দশরশিয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। একই ঘটনায় তার সঙ্গী রুহুল আলী এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

ঘন ঘন এই ধরনের ঘটনা সীমান্ত এলাকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের শঙ্কা বাড়াচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এভাবে সীমান্তে নাগরিকদের জীবনহানি বন্ধে দুই দেশের সরকার ও আন্তর্জাতিক মহলের জোরালো পদক্ষেপ প্রয়োজন

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর