রংপুরে শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে কয়েকটি উপজেলার বহু গ্রাম ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হওয়া প্রবল ঝড় মাত্র ১৫ মিনিটে লন্ডভন্ড করে দেয় ঘরবাড়ি ও গাছপালা। এরপর শুরু হয় শিলাবৃষ্টি, যা চলে রাত ১১টা ১০ মিনিট পর্যন্ত।
ঝড়ে উড়ে গেছে অনেক ঘরের টিনের চাল, বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিচ্ছিন্ন হয়েছে সংযোগ। শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আম, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল ও উঠতি বোরো ধানের। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে তারাগঞ্জ ও গঙ্গাচড়া উপজেলায়। এছাড়া রংপুর নগরী ও পীরগাছা উপজেলার বেশকিছু এলাকাও ক্ষতির শিকার হয়েছে।
তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী, হাড়িয়ার কুঠি, কুর্শা, আলমপুর ও সয়ার ইউনিয়নে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। গঙ্গাচড়া উপজেলার বড়বিল, মন্থনা, বাগপুর, মনিরাম, গোডাউনের হাট, পীরের হাট, কুটিরপাড়, বড়াইবাড়ি, মণ্ডলেরহাট, শয়রাবাড়ি, নোহালিহাট, আনোরমারি ও লক্ষ্মীটারীসহ বেশ কিছু এলাকায় গাছপালা উপড়ে পড়েছে এবং বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তারাগঞ্জের ইকরচালী ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন বলেন,
"ভাত খেয়ে বিছানায় শুয়েছিলাম, হঠাৎ পাথরের মতো শিলাবৃষ্টি আর প্রবল বাতাস শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে গাছ ভেঙে পড়ে, ঘরের চাল উড়ে যায়। কোনোমতে প্রাণে বেঁচেছি।"
একই ইউনিয়নের প্রামানিক পাড়া গ্রামের হৃদয় প্রামানিক বলেন,
"আমার দুটি খামার ঝড়ে দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। সব শেষ হয়ে গেল। প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষতি হলো।"
জুম্মাপাড়া গ্রামের মজনু মিয়া বলেন,
"আগামীতে ধান কাটার কথা ছিল। কিন্তু শিলাবৃষ্টির কারণে ধান মাটিতে পড়ে গেছে, এবার নিশ্চিত লোকসান।"
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কালবৈশাখী ঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ৮ নটিক্যাল মাইল এবং ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল জানিয়েছেন, ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: