আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ডাদেশের পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয়—দলটির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব কোন পথে যাবে এবং দীর্ঘমেয়াদে দলটি কীভাবে নিজেদের সংগঠিত রাখবে।
সমর্থক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সুধীসমাজের মধ্যে জোর আলোচনা চলছে আওয়ামী লীগের সামনের পথচলার দিকনির্দেশনা নিয়ে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিচারিক প্রক্রিয়া অনুযায়ী রায় দেওয়া হলেও শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করায় সেটি কার্যকর হওয়া সহজ হবে না। তবুও তার প্রত্যাবর্তন বা নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের আগের ধারায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে এসেছে বলে বিশ্লেষকদের মত। আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)–এর ভাষ্য, বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনার সক্রিয়ভাবে ফিরে আসার সম্ভাবনা এখন খুবই ক্ষীণ, এবং তার নেতৃত্বে দলটির পুনরায় সংগঠিত হওয়াও কঠিন।
বিশ্লেষকদের মতে, দলকে পুনর্জীবিত করতে হলে অতীতের ভুল স্বীকার করে পরিষ্কার ভাবমূর্তির নতুন নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। তারা মনে করছেন, রাজনৈতিক সমঝোতা বা ‘রি-কনসিলিয়েশন’-এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।
অক্টোবর মাসে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারেও শেখ হাসিনা বলেছিলেন, কোনো ব্যক্তি বা পরিবারই রাষ্ট্রের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে না; সাংবিধানিক শাসন ও স্থিতিশীলতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
দলীয় ও রাজনৈতিক সূত্রের তথ্যমতে, আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনায় তিনটি নাম সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে।
সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে সম্ভাব্য শীর্ষ নেতৃত্বের তালিকায় প্রধানভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর তিনি জনসমক্ষে খুব একটা দেখা না দিলেও তাকে রাষ্ট্রীয় নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। সংবিধান অনুযায়ী পরবর্তী সংসদ গঠনের ক্ষেত্রে তার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
‘ক্লিন ইমেজ’-এর অধিকারী সাবের হোসেন চৌধুরীর নামও সাধারণ সম্পাদক বা গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বের আলোচনায় উঠে আসছে। তিনি গ্রেফতার হলেও পরে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় না থাকলেও তার বাসায় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সাম্প্রতিক বৈঠক রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সিটির সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীও আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে। তিনি এখনও কারাবন্দি। সম্প্রতি কয়েকটি মামলায় জামিন পেলেও নতুন করে চারটি হত্যা মামলা-সহ মোট পাঁচ মামলায় তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: