জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি ও গণভোটের সময়সূচি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ মেটাতে খোলামেলা আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
দলের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, “বিএনপির সঙ্গে কোনো সংঘাতে যেতে চায় না জামায়াত; বরং দেশের স্বার্থে সংলাপেই সমাধান দেখতে চায়।”
রোববার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান ডা. তাহের। তিনি বলেন, “রাজনীতির অনেক খেলা আছে, জামায়াত সে খেলায় নেই। দেশের সংকট নিরসনে আন্তরিক আলোচনা প্রয়োজন।”
বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “এ মুহূর্তে আমরা সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমেই আহ্বান জানাচ্ছি। দেখি, বিএনপি কী প্রতিক্রিয়া জানায়।”
ডা. তাহের জানান, জামায়াত চায় আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, তবে গণভোট নভেম্বরেই সম্পন্ন করা হোক। তার ভাষায়, “সব দল গণভোটে একমত, কিন্তু একটি দল সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট চায়—যা সম্পূর্ণ অবাস্তব।”
উল্লেখ্য, সাত মাসব্যাপী সংলাপের পর ১৭ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলো ‘জুলাই জাতীয় সনদ’-এ স্বাক্ষর করে। এতে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব থাকলেও, ৬১টির ওপর কোনো না কোনো দলের নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে। বিএনপি ১৫টি প্রস্তাবে নোট অব ডিসেন্ট দেয়—দলটি বলেছে, ক্ষমতায় গেলে এসব বাস্তবায়ন করবে না।
তবে ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, প্রণীত ‘সংবিধান সংস্কার আদেশের’ খসড়ায় নোট অব ডিসেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
বিএনপি একে ‘প্রতারণা’ বলে অভিহিত করেছে এবং নির্বাচনের দিনেই গণভোট আয়োজনের দাবি জানাচ্ছে। অন্যদিকে, জামায়াত চায় নোট অব ডিসেন্ট–মুক্ত খসড়ার ওপর নভেম্বরেই গণভোট হোক। আগামী সোমবার উপদেষ্টাদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সমালোচনা করে ডা. তাহের বলেন, “১৯৯১ সালে জামায়াতের সমর্থন না পেলে বিএনপি কখনো সরকার গঠন করতে পারত না। অথচ এখন তারা কৃতজ্ঞতার বদলে প্রতারণার রাজনীতি করছে। ফ্যাসিবাদের ভাষায় কথা বলছে।
তিনি আরও বলেন, “বিএনপি শুরু থেকেই সংস্কার প্রক্রিয়ায় অনীহা দেখিয়েছে। বিশ্বের কোথাও নোট অব ডিসেন্টের ওপর গণভোট হয় না। নিজেদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্যে তারা জনগণের আস্থা হারাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: