[email protected] শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
১৬ কার্তিক ১৪৩২

ডিসেম্বরের শুরুতেই পদ ছাড়তে পারেন ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ ও আসিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ১১:৩৪ এএম

সংগৃহীত ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

তার আগে ডিসেম্বরের শুরুতেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টা পরিষদের সম্ভাব্য রদবদল এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বিশেষ করে দুই ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের জল্পনা জোরদার হয়েছে।

সরকার ও এনসিপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সবকিছু ঠিক থাকলে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই এই দুই উপদেষ্টা পদত্যাগপত্র জমা দিতে পারেন। তারা দুজনই আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছেন বলেও জানা গেছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। ওই সরকারের ২৩ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদে বর্তমানে দুজন ছাত্র প্রতিনিধি রয়েছেন।

তাদের মধ্যে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম গত ১০ নভেম্বর উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন, আর স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

সম্প্রতি বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে কয়েকজন উপদেষ্টার ‘রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা’ নিয়ে আপত্তি তোলে। নাম প্রকাশ না করলেও রাজনৈতিক মহলে ধারণা, ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে দুই ছাত্র উপদেষ্টার দিকেই। সরকার-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গত সেপ্টেম্বরেই তাদের পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।

১৪ আগস্ট সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, “নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই আমি পদত্যাগ করব। নির্বাচনের নিরপেক্ষতার স্বার্থে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় রাজনীতি করা উচিত নয়।” অন্যদিকে ২৮ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে মাহফুজ আলম বলেন, “দুই মাস ধরে অনিশ্চয়তায় আছি, কবে পদত্যাগ করব জানি না।”

রাজনৈতিক মহলে আলোচনায় রয়েছে, আসিফ মাহমুদ ঢাকার কোনো একটি আসন—সম্ভবত ঢাকা-১০ (ধানমন্ডি  -কলাবাগান–নিউমার্কেট–হাজারীবাগ) থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। তবে এনসিপি তার প্রতি সমর্থন জানাতে পারে। অন্যদিকে, মাহফুজ আলম লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসন থেকে এনসিপি বা জোটগতভাবে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন বলে সূত্র জানিয়েছে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, “যে কোনো উপদেষ্টা যদি রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে চান, তাহলে আগে পদত্যাগ করতেই হবে। এরপর যোগদানের বিষয়টি দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হবে।

দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন মনে করেন, “সরকারে ছাত্র উপদেষ্টা থাকা গণঅভ্যুত্থানের প্রতীকী বৈধতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাদের পদত্যাগ করলে অন্তর্বর্তী সরকারের গ্রহণযোগ্যতাও প্রশ্নে পড়তে পারে।”

অন্তর্বর্তী সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। ডিসেম্বরের শুরুতে তারা পদত্যাগ করলে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সমীকরণ সৃষ্টি হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর