[email protected] শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
১৫ কার্তিক ১৪৩২

নভেম্বরে গণভোটসহ ইসিতে জামায়াতের ১৮ দফা সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ৫:৪৩ পিএম

সংগৃহীত ছবি

আগাম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে ১৮ দফা সুপারিশ দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব হলো—আগামী নভেম্বর মাসেই গণভোট আয়োজনের আহ্বান।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক করে জামায়াতের সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল। বৈঠকে নেতৃত্ব দেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পরওয়ার।

গণভোট নভেম্বরেই চায় জামায়াত

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের গোলাম পরওয়ার বলেন,

“আমরা ১৮ দফা প্রস্তাব দিয়েছি। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—গণভোট নির্বাচনের আগে, অর্থাৎ নভেম্বর মাসেই করতে হবে। জুলাই জাতীয় সনদের মাধ্যমে যে রাষ্ট্রকাঠামো ও সাংবিধানিক সংস্কারের প্রস্তাব এসেছে, সেটি জনগণকে জানাতে হবে। জানার পরেই তো তারা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দেবে। যদি একসঙ্গে ভোট হয়, ভোটার তো কিছুই বুঝল না।”

তিনি আরও বলেন, সংস্কার ও জুলাই সনদের বিষয়গুলো নির্বাচন কমিশনকে জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। “ওয়েবসাইটে দিতে হবে, যাতে জনগণ জানে এবং ভোটাররা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। নভেম্বরই এই কাজের উপযুক্ত সময়,”—বলেন তিনি।

একই দিনে ভোটে সহিংসতার আশঙ্কা

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন,

“একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট হলে কেন্দ্রে সহিংসতা হতে পারে, কিছু কেন্দ্রে ভোট বন্ধও হতে পারে। ভোট বন্ধ হলে গণভোটের ফল কীভাবে নির্ধারণ হবে? এ বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য আসেনি। বরং ধৈর্যের সঙ্গে শুনেছেন—মনে হয়েছে আমাদের বক্তব্যে তাঁরা আশ্বস্ত হয়েছেন।”

তিনি আরও জানান, আলোচনা খোলামেলা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

“আমরা কমিশনকে বলেছি, আমরা সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। কিন্তু নির্বাচনটি অবশ্যই সুষ্ঠু হতে হবে।”

বিএনপি ও উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্তব্য

বিএনপির আপত্তির বিষয়ে গোলাম পরওয়ার বলেন,

“জোট গঠন করলেও প্রতিটি দল নিজ নিজ প্রতীকে ভোট করবে—এ সিদ্ধান্ত উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত হয়েছে। কিন্তু ২৫ তারিখে একটি দলের পক্ষ থেকে এসে এ সিদ্ধান্ত সংশোধনের দাবি জানানো হয়েছে, যা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের পরিপন্থী ও দুঃখজনক।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন,

“একজন উপদেষ্টা একটি দলের নেতার সঙ্গে তথাকথিত ‘জেন্টলম্যান অ্যাগ্রিমেন্ট’ করে কমিশনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের চেষ্টা করেছেন। এটা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিপন্থী, আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। সংশোধিত বিধানের ভিত্তিতেই নির্বাচন হতে হবে।”

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন—
সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ.টি.এম. মাসুম,
সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান,
এইচ.এম. হামিদুর রহমান আজাদ,
মিডিয়া সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ,
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির ও নির্বাহী পরিষদের সদস্য নুরুল ইসলাম,
এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির ও নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ সেলিম।

জামায়াতের নেতারা আশা প্রকাশ করেছেন, নির্বাচন কমিশন তাদের প্রস্তাবগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে। কমিশন সূত্র জানিয়েছে, প্রাপ্ত সুপারিশগুলো সংরক্ষণ করে পরবর্তী আলোচনায় তা বিশ্লেষণ করা হবে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর