[email protected] শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
১৫ কার্তিক ১৪৩২

নির্বাচনে বিএনপি জিতলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, জানালেন মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ৫:১৯ পিএম

সংগৃহীত ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন বেশ সরগরম আলোচনা— নির্বাচনে বিএনপি জিতলে কে হবেন প্রধানমন্ত্রী? এ বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিএনপি মহাসচিবের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়— নির্বাচনে জয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাকে মনোনয়ন দেবে বিএনপি?

জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন,

“দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যদি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন এবং নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের উপযুক্ত মনে করেন, তাহলে অবশ্যই তিনিই প্রধানমন্ত্রী হবেন। তবে যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই প্রধানমন্ত্রী হবেন— এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।”

খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন,

“বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না, তা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে তার শারীরিক অবস্থার ওপর। যদি স্বাস্থ্য ভালো থাকে, নিশ্চয়ই অংশ নেবেন। আর যদি না থাকে, তাহলে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

বিএনপির নতুন প্রচারণা উদ্যোগ ‘বাংলাদেশ গ্রাসরুটস নেটওয়ার্ক’

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচারণায় নতুন মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে বিএনপি। মাঠের রাজনীতির পাশাপাশি এবার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও সমানভাবে সক্রিয় হওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে দলটি। এ লক্ষ্যেই গঠন করা হচ্ছে নতুন সংগঠন ‘বাংলাদেশ গ্রাসরুটস নেটওয়ার্ক (বিজিএন)’।

এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিএনপি তৃণমূল সংগঠনকে সুসংগঠিত করা এবং অনলাইন প্রচার জোরদার করা— উভয় লক্ষ্যেই কাজ করবে। একই সঙ্গে অপপ্রচার মোকাবিলায় কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলাও এর অন্যতম উদ্দেশ্য।

বিজিএন গঠনের প্রস্তাব ইতোমধ্যে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। খুব শিগগির সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. জিয়াউদ্দিন হায়দারের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হচ্ছে। প্রত্যেক কেন্দ্রীয় নেতা ২০টি আসনের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করবেন।

বিজিএনের অধীনে দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনে দুজন করে মোট ৬০০ স্নাতক পাস অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। এরা সরাসরি তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করবেন, অনলাইন প্রচারণায় অংশ নেবেন এবং নিয়মিতভাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। তাদের নির্দিষ্ট মাসিক সম্মানী দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।

এই অ্যাক্টিভিস্টদের কার্যক্রমের নিয়মিত প্রতিবেদন বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে জমা দেওয়া হবে, যা দলের নীতিনির্ধারণী আলোচনায় ব্যবহৃত হবে। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য অ্যাক্টিভিস্টদের সংক্ষিপ্ত আত্মজীবনী সংগ্রহ করা হয়েছে এবং যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে।

অনলাইন প্রচারে নতুন কৌশল

বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, গত ৮ অক্টোবর দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিজিএনের কাঠামো ও কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

দলটির ধারণা, এই নতুন উদ্যোগ শুধু তৃণমূল সাংগঠনিক সক্ষমতাই বৃদ্ধি করবে না, বরং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে “বট বাহিনী”র প্রভাব মোকাবিলায়ও কার্যকর ভূমিকা রাখবে। বিএনপির লক্ষ্য— নির্বাচনী প্রচারণার আগেই দলের বার্তা দেশের প্রতিটি প্রান্তে এবং ডিজিটাল মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে পৌঁছে দেওয়া।

দলীয় তথ্য অনুযায়ী, বিজিএনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রাথমিকভাবে ১৫ নেতা থাকবেন, প্রয়োজনে এ সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সংগঠনের সব কার্যক্রম তদারকি করবেন, আর মাঠপর্যায়ের ৬০০ অ্যাক্টিভিস্ট হবেন বিজিএনের মূল চালিকাশক্তি।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর