চব্বিশের ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন।
সেই সময় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনি যাওয়ার আগে পদত্যাগ করেছেন। তবে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিন্ন বক্তব্য দেন, যা তেমন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে একটি দাবি— “বৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র জাতিসংঘে জমা না দিলে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আসবে।” বিষয়টি নিয়ে নানামুখী আলোচনা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, জাতিসংঘ শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র জমা না দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এমন কোনো তথ্য জাতিসংঘ, অন্য কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা বা গণমাধ্যম সূত্রেও পাওয়া যায়নি।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি কোনো নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে প্রকাশিত হয়নি। বরং কোনো প্রমাণ ছাড়াই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব হিসেবে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে।
যদি জাতিসংঘ বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিত, তাহলে তা আন্তর্জাতিক ও জাতীয় গণমাধ্যমে শিরোনাম হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ডে অনুসন্ধান চালিয়েও বিশ্বস্ত কোনো গণমাধ্যম, সংবাদ সংস্থা বা সরকারি ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এছাড়া জাতিসংঘের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম (ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম)–এও এ সংক্রান্ত কোনো ঘোষণা বা নোটিশ নেই।
তবে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিষয়ক দপ্তর (OMA) সম্প্রতি বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে একটি চিঠি পাঠিয়েছে— যেখানে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীর সংখ্যা কিছুটা কমানোর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথম আলো ১৯ অক্টোবরের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।
অতএব, “শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র জাতিসংঘে জমা না দিলে সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে”— এই দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন
এসআর
মন্তব্য করুন: