বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক বলেছেন, দুনিয়ার এমন কোনো শক্তি নেই, যা শেখ হাসিনাকে আবার বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে পারবে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। পবিত্র কোরআন অবমাননা ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ‘ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদ জানাতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
শেখ হাসিনার উদ্দেশে ফারুক বলেন, “আপনি দেশে গণহত্যা চালিয়েছেন, গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন। ভারতীয় সমর্থনের ওপর নির্ভর করে রাজনীতি করেছেন—এখন দেশে ফিরে আসতে চাইলে তা হবে না।”
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ এখন বাংলাদেশের নয়, বরং পার্শ্ববর্তী দেশের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত। “তিস্তা নদীর পানি পাই না, ফারাক্কা বাঁধ সময়মতো খোলে না, ফেলানির লাশ সীমান্তে ঝুলে থাকে; তবুও তারা বলে, মোদি আমাদের বন্ধু! মোদি কখনো বাংলাদেশের বন্ধু হতে পারে না।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা স্বাধীনতার জন্য লড়েছিলেন, আজ তাদের অনেককে রাজাকার বলা হচ্ছে। মেজর জলিল, সিরাজ শিকদারদের মতো মানুষদের নাম বিকৃত করা হচ্ছে।”
শেখ মুজিবুর রহমানকে সমালোচনা করে ফারুক বলেন, “স্বাধীনতার পর সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, ভোটের বাক্স হেলিকপ্টারে এনে ফল পরিবর্তন করা হতো। আজ শেখ হাসিনা সেই একই পথ অনুসরণ করছেন—সারা দেশে মূর্তি গড়ে তুলেছেন, অথচ মানুষের অধিকার হরণ করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “যতদিন শেখ হাসিনা ভারতীয় সমর্থনের ওপর নির্ভর করে রাজনীতি করবেন এবং দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করবেন, ততদিন দেশের জনগণ তাকে প্রত্যাখ্যান করবে। আল্লাহর কসম, এমন কোনো শক্তি নেই, যা তাকে আবার বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে পারবে।”
জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে ফারুক বলেন, “এখন আর বিভক্ত থাকার সময় নয়। শেখ হাসিনার স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যারা লড়ছে, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ইনশাআল্লাহ, ঐক্য গড়ে উঠলে শেখ হাসিনা আর কখনো ক্ষমতায় ফিরতে পারবেন না। আমার ভোট আমি দেব—মৃত মানুষ আর ভোট দেবে না।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমি প্রফেসর ইউনূসের বক্তব্য শুনেছি। আমি তার জন্য দোয়া করি—ফেব্রুয়ারি মাসে যেন সত্যিই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ঢাকা মহানগর উত্তর আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহধর্মবিষয়ক সম্পাদক এটিএম আব্দুল বারী ড্যানি, ওলামা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা কাজী আলমগীর হোসেন ও মাওলানা ক্বারী গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
এসআর
মন্তব্য করুন: