জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের পদ্ধতি নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
রোববার (৫ অক্টোবর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এ আলোচনা শুরু হয়। আজকের বৈঠকে মূলত দলগুলোর মতপার্থক্য কতটা কমেছে এবং বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে কোনো সমঝোতার অগ্রগতি হয়েছে কি না—তা মূল্যায়ন করবে কমিশন।
সূত্র জানায়, দলগুলো চাইলে আজকের আলোচনায় বিশেষজ্ঞদের দেওয়া সুনির্দিষ্ট পরামর্শ বা নতুন প্রস্তাবও কমিশনের কাছে তুলে ধরতে পারবে।
সাত দফার ভিত্তিতে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া চূড়ান্ত করা হলেও এর বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে এখনো ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। এ কারণেই সনদ প্রণয়ন প্রক্রিয়া আটকে আছে।
এই জটিলতা নিরসনে গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনায় বসে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তিন দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হলেও কোনো চূড়ান্ত ঐক্যমত্য গড়ে ওঠেনি।
আজকের আলোচনাতেও সমঝোতা না হলে আরও একদিন আলোচনা চলতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। কমিশন চায়, ১৫ অক্টোবরের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষরসহ জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ রূপ প্রকাশ করা হোক।
এর আগে, ১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে কমিশন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ প্রস্তাব আকারে দলগুলোর সামনে উপস্থাপন করে। প্রস্তাবে বলা হয়—সনদের মৌলিক সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার একটি ‘সংবিধান আদেশ’ (Constitutional Order) জারি করতে পারে, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
পরে ওই আদেশকে কেন্দ্র করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজনের প্রস্তাবও দেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছে। তাদের মতে, সংবিধান আদেশের মাধ্যমে সংস্কার কার্যকর করা হলে তা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে চলে যাবে।
কমিশন সদস্যদের মতে, আলোচনার মাধ্যমে সবার মতামত ও পরামর্শ একীভূত করে একটি গ্রহণযোগ্য রূপরেখা তৈরি করাই এখন প্রধান লক্ষ্য। এ বিষয়ে কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন,
“আমরা চাই, কোনো পক্ষ বাদ না পড়ে এমন একটি বাস্তবায়ন কাঠামো তৈরি হোক, যাতে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ কার্যকর হয়।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও আলোচনায় বসেছে। দীর্ঘ আলোচনার পরও এখনো সমঝোতা হয়নি। তবে কমিশন আশাবাদী—১৫ অক্টোবরের মধ্যে দলগুলোর সম্মতিতে সনদের পূর্ণাঙ্গ রূপ ঘোষণা করা সম্ভব হবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: