ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পূর্ণ উদ্যমে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।
আসনভিত্তিক প্রার্থী যাচাই–বাছাই প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, দল যাকে মনোনয়ন দেবে, নির্বাচনি মাঠে তার পক্ষেই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, অক্টোবরের মধ্যভাগে একক প্রার্থীদের ‘সবুজ সংকেত’ দিতে পারে বিএনপি। এরই মধ্যে প্রতিটি আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দলের দায়িত্বশীল নেতারা। পাশাপাশি সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে তারেক রহমান নিজেও বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। জরিপে এগিয়ে থাকা প্রার্থীদের বিষয়ে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত যাচাই–বাছাই। বর্তমানে প্রায় ৭০ শতাংশ আসনে সম্ভাব্য একক প্রার্থীর তালিকা হাইকমান্ডের হাতে রয়েছে।
যুগপৎ আন্দোলনে থাকা মিত্র দলগুলোকেও সঙ্গে নিয়েই নির্বাচনে যেতে চায় বিএনপি। এজন্য কিছু আসন ছাড় দিতেও প্রস্তুত দলটি। সূত্র জানায়, মিত্র দলগুলোর কাছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা চাওয়া হয়েছে—যার মধ্যে বেশ কয়েকটি দল ইতোমধ্যে তালিকা দিয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ পর্যন্ত অন্তত পাঁচটি জরিপ চালিয়েছেন প্রার্থী যাচাইয়ে। এসব জরিপ পরিচালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক, সরকারি–বেসরকারি সংস্থা, দলের সাংগঠনিক টিম এবং মিডিয়ার মাধ্যমে।
তারেক রহমানের নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী, আন্দোলন–সংগ্রামে সম্পৃক্ত, ত্যাগী, সততার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, এলাকায় জনপ্রিয় ও ক্লিন ইমেজধারী প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দলের নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়—নির্বাচনি প্রস্তুতি জোরদার করা ও মাঠ পর্যায়ে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা। সেই সঙ্গে স্পষ্ট করে জানানো হয়, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কেউ কাজ করলে বা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই সতর্কবার্তা ইতোমধ্যে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছে পৌঁছে গেছে।
দলীয় নেতাদের মতে, প্রথম পর্যায়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনানুষ্ঠানিকভাবে ‘সবুজ সংকেত’ দেওয়া হবে। এরপর তারা মাঠে প্রচারণা শুরু করতে পারবেন। অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও ওই প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করবেন। তফশিল ঘোষণার পর দলের পার্লামেন্টারি বোর্ডের মাধ্যমে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হবে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,
“আমাদের নেতা তারেক রহমান যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, সেভাবেই আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানান,
“আগামী নির্বাচনের জন্য বিএনপি পুরোপুরি প্রস্তুত। একক প্রার্থীর তালিকা প্রায় প্রস্তুত এবং অক্টোবরের মধ্যভাগে সবুজ সংকেত দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে।”
আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন,
“খুব শিগগিরই আসনভিত্তিক একক প্রার্থীদের মাঠে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে। তবে চূড়ান্ত মনোনয়ন তফশিল ঘোষণার পরই পার্লামেন্টারি বোর্ড নির্ধারণ করবে।”
তিনি আরও জানান,
“প্রায় প্রতিটি আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য প্রার্থী আছেন। অনেক আসনে পাঁচ থেকে দশজন পর্যন্ত মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। তাই নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এসআর
মন্তব্য করুন: