ব্রিটিশ সংসদ সদস্য ও যুক্তরাজ্যের সাবেক শ্রমমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে জাল নথি তৈরি করছে।
এসব নথির মাধ্যমে তাকে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে বলে দাবি করেন তিনি।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিক ২০০১ সালে একটি বাংলাদেশি পাসপোর্ট এবং ২০১১ সালে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করেছিলেন। এমনকি ঢাকার আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট নবায়নের জন্যও আবেদন করেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
তবে টিউলিপ এসব দাবি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তার মুখপাত্র জানিয়েছেন, “বাংলাদেশ গত এক বছর ধরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এখন ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হচ্ছে।”
টিউলিপের ঘনিষ্ঠজনরা দাবি করেছেন, উত্থাপিত নথিগুলোর মধ্যে একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। পরিচয়পত্রে দেওয়া ঠিকানা আসলে শেখ হাসিনার বাসভবন, অথচ টিউলিপ কখনো ঢাকায় বসবাস করেননি। এছাড়া উল্লিখিত আইডিটি পুরনো ধরনের, যা বর্তমানে ব্যবহৃত স্মার্টকার্ড নয়।
পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, টিউলিপ কেবলমাত্র শিশুকালে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করেছিলেন। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর থেকে তিনি আর কখনো বাংলাদেশি পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র নেননি।
এদিকে বর্তমানে বাংলাদেশে চলমান এক দুর্নীতির মামলায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রভাব ব্যবহার করে পরিবারের সদস্যদের নামে জমি বরাদ্দ নিয়েছেন।
তবে টিউলিপ এ অভিযোগকে “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও সাজানো” বলে দাবি করেছেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০১৫ সালে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বাংলাদেশকে “আমাদের দেশ” বলে উল্লেখ করেছিলেন। আবার ২০১৭ সালে জাতীয়তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “আমি ব্রিটিশ এমপি, বাংলাদেশি নই।”—এই দুটি ঘটনার পর থেকেই তার নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক নতুন করে সামনে এসেছে।
টিউলিপের আইনজীবীদের দাবি, তিনি কখনো বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র নেননি এবং প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় কোনো বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করেননি। তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জাল নথি তৈরি করেছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: