বিএনপি-জামায়াত-এনসিপির সঙ্গে বৈঠকে ইসহাক দার

ঢাকায় দুই দিনের সফরে আসা পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার প্রথম দিনেই একাধিক রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীতে পাকিস্তান দূতাবাসে তিনি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।

এনসিপির সঙ্গে বৈঠক

বৈঠক শেষে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানান, আলোচনায় দক্ষিণ এশিয়ায় পানিসংকট ও যুদ্ধের ঝুঁকি গুরুত্বসহকারে উঠে আসে। বাংলাদেশের নদীমাতৃক অভিজ্ঞতা ও পাকিস্তানের অতীত অভিজ্ঞতা নিয়ে মতবিনিময় হয়। এছাড়া ফার্মাসিউটিক্যাল খাত, সাংস্কৃতিক বিনিময়, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়।

তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে নতুন বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হয়। সার্ক দীর্ঘদিন ধরে ভারতের কারণে অকার্যকর হয়ে আছে— কীভাবে এটিকে পুনরুজ্জীবিত করা যায়, তাও আলোচনায় স্থান পায়। নাসীরুদ্দীনের মতে, পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বিস্তার করতে পারে, যা আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারে কাজে লাগানো সম্ভব।

বিএনপির সঙ্গে বৈঠক

এদিন সন্ধ্যা ৬টায় পাকিস্তান হাইকমিশনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন ইসহাক দার। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও সমসাময়িক আন্তর্জাতিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয়।

বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন— স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। বৈঠক শেষে বিএনপি নেতারা পাকিস্তান হাইকমিশনের নৈশভোজে যোগ দেন।

জামায়াতের সঙ্গে বৈঠক

এর আগে বিকেলে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও বৈঠক করেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী। দলের নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সার্ক পুনরুজ্জীবনের বিষয় উঠে আসে।

বৈঠক শেষে তাহের বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ছিল একপেশে। তবে সকল দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফিলিস্তিন ইস্যুসহ বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় মুসলিম দেশগুলোর সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আলোচনা হয়।

আজকের কর্মসূচি

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, সফরের দ্বিতীয় দিন রোববার (২৪ আগস্ট) সকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন ইসহাক দার। পরে প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকে ছয়টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হবে। এর মধ্যে সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা বিলোপ চুক্তি অন্যতম।