তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় ভবিষ্যতে কেউ যেন হস্তক্ষেপ করতে না পারে—এ লক্ষ্যেই গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন,
“তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে চাই আমরা। কেউ যেন ভবিষ্যতে এর সঙ্গে আপস করতে না পারে। তাই যদি কখনও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়, সেটি যেন শুধু গণভোটের মাধ্যমেই করা হয়—এই প্রস্তাব দিয়েছি।”
বৈঠকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট নিয়েও আলোচনা হয়। তবে উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ গঠনের পদ্ধতি ও ক্ষমতা বিভাজন নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন,
“দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের বিষয়ে অধিকাংশ দল নীতিগতভাবে একমত হলেও তার গঠনপ্রক্রিয়া, কার্যক্ষমতা, সদস্য মনোনয়নের পদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। কারও মতে, প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে (PR সিস্টেম) সদস্য নির্বাচিত হওয়া উচিত, আবার কেউ মনে করেন ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে আরও স্পষ্টতা দরকার।”
সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, বিএনপির পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, যেখানে ১০০ আসনের একটি উচ্চকক্ষ গঠনের কথা বলা হয়েছে। এই উচ্চকক্ষে থাকবেন—
তিনি বলেন,
“এই উচ্চকক্ষ বিদ্যমান সংবিধানে সংরক্ষিত নারী আসনের মতো প্রতিনিধিত্ব করবে। তবে এটি কীভাবে নির্বাচন হবে, তার ক্ষমতা কী হবে, সাধারণ বিল ও সংবিধান সংশোধনী কীভাবে পাস হবে—এসব বিষয় নিয়ে এখনো ব্যাপক মতবিরোধ রয়েছে।”
বৈঠকে অংশ নেওয়া কয়েকটি দল দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রয়োজনীয়তা ও ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তোলে। সালাহউদ্দিন বলেন,
“বর্তমান আর্থিক সক্ষমতায় একটি নতুন উচ্চকক্ষ গঠনের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অনেকের মতে, এটি একটি ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া, যা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বাস্তবসম্মত নয়।”
সব মতামত নিয়ে আগামী রোববার ঐকমত্য কমিশন একটি প্রাথমিক সিদ্ধান্ত দেবে বলে জানানো হয়েছে। এরপর বিএনপি তাদের সম্মতি বা অসম্মতির বিষয়টি জানাবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন,
“সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে—কীভাবে বিদ্যমান সংবিধানকে জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে পুনর্গঠন করা যায়, সেটিও আলোচনার অংশ ছিল।”
এসআর
মন্তব্য করুন: