রাজনীতির ময়দানে যুক্ত হলো নতুন একটি দল—‘বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি (বিআরপি)’।
শুক্রবার (২০ জুন) বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দলের আংশিক কমিটি ঘোষণা ও বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির আত্মপ্রকাশ ঘটে।
দলের নাম ঘোষণা করেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া আয়াতুল্লাহ বাস্তি। এরপর শহীদ ছাত্র আনাসের মা সানজিদা খান দীপ্তি প্রতীকী বেলুন উড়িয়ে দলের যাত্রা শুরু করেন।
দলের স্লোগান—‘সবার ওপরে দেশ’।
দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সাবেক সেনা কর্মকর্তা, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, আইনজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। দলের নেতাকর্মীরা ‘সংস্কার না নির্বাচন, সংস্কার সংস্কার’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘রিপাবলিক জিন্দাবাদ’, ‘ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা’—ইত্যাদি স্লোগানে অনুষ্ঠান প্রকম্পিত করে তোলে।
দলটির ২৮ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন শহীদ আনাসের মা। কমিটিতে দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন—
দলের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন যুগ্ম সদস্য সচিব সাজ্জাদ হোসেন ইউনুস। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি হবে একটি জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল, যার লক্ষ্য হবে নাগরিক মর্যাদা ও সামষ্টিক কল্যাণ।
অনুষ্ঠানে শহীদদের পরিবার, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং পেশাজীবীরা বক্তব্য দেন।
শহীদ ফারহান ফায়াজের বাবা শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, “আমার একমাত্র ছেলের ত্যাগ যেন বৃথা না যায়। আমরা চাই এই দল জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করুক।”
শহীদ আনাসের বাবা সাহরিয়া খান পলাশ বলেন, “আমরা আনাসকে হারিয়েছি, কিন্তু বিচারের কোনো অগ্রগতি নেই। খুনি হাসিনার বিচার চাই। মিডিয়ার প্রতি অনুরোধ—আপনারা এই হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করুন।”
বিআরপির প্রধান উপদেষ্টা সেলিম প্রধান বলেন, “রাজনীতি এখন দুর্নীতি আর চাঁদাবাজির জায়গা হয়ে উঠেছে। আমরা সেটাকে কঠিন করে তুলব।”
সাবেক সেনাকর্মকর্তা রাজিব আহমেদ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে রাজনৈতিক ব্যবসা হচ্ছে। আমরা মানবিক রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে এসেছি।”
সভাপতি লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) মেহেদী হাসান বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট থেকে আমরা সরে এসেছি। আমরা চাই বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি, যা জনগণের অধিকার ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করবে।”
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, “শুধু নির্বাচন দিয়ে চলে যাওয়া নয়, আগে সংস্কারের রোডম্যাপ দিন। তা না হলে আপনিও ব্যর্থ হিসেবে বিবেচিত হবেন।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এই দেশকে কোনোভাবে বিক্রি হতে দেব না। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের অবস্থান ঠিক করতে হবে।”
এসআর
মন্তব্য করুন: