[email protected] শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫
৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ড. ইউনূস–তারেক রহমান বৈঠক: রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২ জুন ২০২৫ ৮:৩৫ পিএম

সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

 স্থানীয় সময় বুধবার (১২ জুন) সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ডরচেস্টার হোটেলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, নির্বাচন ও ক্ষমতা হস্তান্তর সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে এ বৈঠককে ঘিরে দেশে-বিদেশে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা ও বিশ্লেষণ।

দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোট এ বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠকটিকে “টার্নিং পয়েন্ট” হিসেবে অভিহিত করে বলেন, “এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে নতুন এক দিগন্তের সূচনা হতে পারে। সমাধান হয়ে যেতে পারে বিদ্যমান অনেক জটিলতার।”
একইভাবে, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক নির্বাচন, নির্বাচন-সংস্কার এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”

১২ দলীয় জোটের অন্যতম নেতা এবং জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, “এই বৈঠকের মাধ্যমে দেশের রাজনীতি ও নির্বাচনের ধোঁয়াশা দূর হবে।” তিনি আরও আশা প্রকাশ করেন, “মতবিরোধ নিরসনের একটি সুস্থ ধারায় ফিরবে রাজনীতি।”

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “বৈঠকে কী আলোচনা হবে তা না জানা পর্যন্ত মন্তব্য করা কঠিন। তবে দুজনই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, তাদের আলোচনা থেকে ইতিবাচক কিছু বেরিয়ে আসবে—এটাই প্রত্যাশা।”

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন ও সংস্কার সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হওয়া উচিত। এপ্রিল নয়, ডিসেম্বরের দিকে নির্বাচন এগিয়ে আনা নিয়ে আলাপ প্রয়োজন।”

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব বলেন, “এটি গণতান্ত্রিক চর্চার অংশ। তবে এই বৈঠকের কারণে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হওয়া উচিত নয়। আলোচনায় যেন বিচার ও সংস্কারের বিষয়টিও গুরুত্ব পায়।”

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, “বিএনপি একটি প্রধান স্টেকহোল্ডার। তাই এই আলোচনাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক সমন্বয় বাড়বে।”

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “বর্তমান সংকটে সমঝোতা ও ত্যাগই একমাত্র পথ। এ বৈঠক দেশের জন্য কল্যাণকর হোক—এটাই প্রত্যাশা।”

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, “বিএনপি দেশের অন্যতম প্রধান দল। তাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক স্বাভাবিক। তবে নির্বাচনের ভারসাম্য যেন কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়।”

তিনি আরও বলেন, “নিরপেক্ষ আচরণ নিশ্চিতে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমানতালে আলোচনা হওয়া জরুরি।”

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, “এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। আমরা আশা করি, এই বৈঠকের মাধ্যমে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসবে।”

এই বহুল আলোচিত বৈঠক ঘিরে দেশবাসী এখন আশাবাদী, যার মধ্য দিয়ে হয়তো গতি আসবে রাজনৈতিক সমাধানের পথচলায়।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর