বিএনপি অভিযোগ করেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছে।
দলটি এই বাজেটকে ‘গতানুগতিক’ আখ্যা দিয়ে বাজেট প্রক্রিয়ার মৌলিক সংস্কারের দাবি জানিয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর দলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আমীর খসরু বলেন, “দেশে বর্তমানে কার্যকর সংসদ বা গণতান্ত্রিক সরকার নেই। আমরা আশা করেছিলাম, অন্তর্বর্তী সরকার বাজেট ঘোষণার আগে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে এবং সাধারণ মানুষের মতামত নেবে। কিন্তু তা না করে তারা একতরফাভাবে বাজেট দিয়েছে, যা পুরোপুরি গতানুগতিক।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষা খাতে কর আরোপের কোনো যৌক্তিকতা নেই। বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষাক্ষেত্রে আরোপিত কর প্রত্যাহার করা হবে।”
বাজেট প্রক্রিয়ায় নতুন চিন্তা ও উদ্ভাবনী দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাজেট তৈরিতে আমাদের ‘আউট অব দ্য বক্স’ চিন্তা করতে হবে। এই বাজেটে সেই সুযোগ ছিল, কিন্তু সরকার তা কাজে লাগায়নি।”
সংবিধান ও বাজেট প্রক্রিয়ায় কাঠামোগত সংস্কারের কথা তুলে ধরে আমীর খসরু বলেন, “বাজেট অনুমোদনের প্রচলিত সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য সংসদীয় কমিটিকে শক্তিশালী করা, জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনপূর্ব কেয়ারটেকার সরকার বিষয়ক স্পষ্ট নির্দেশনাসহ ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন।”
জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়া ও আয় কমে যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বর্তমানে একদিকে মুদ্রাস্ফীতি, অন্যদিকে জনগণের আয় হ্রাস পেয়েছে। এর মধ্যে কর বাড়ানো হলে সাধারণ মানুষ আরও চাপে পড়বে। বাজেটের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন। কিন্তু বাজেটে সেই দিকটি উপেক্ষিত হয়েছে।”
ক্ষমতায় গেলে দলের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা যা বলেছি তা বাস্তবায়ন করবো। কোনো কিছু বাতিল করার প্রসঙ্গে আমরা যাব না।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহবুব হোসেন শ্যামল, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার উপস্থিত ছিলেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: