বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
রোববার (৪ মে) বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে রাজধানীর ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী শিশির মনির এক ফেসবুক পোস্টে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ব্যারিস্টার রাজ্জাক। তিনি দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্যে অবস্থানের পর ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরে ফের আইনি পেশায় সক্রিয় হন। দেশে ফেরার পর গত ৬ জানুয়ারি জুনিয়র আইনজীবীরা তাকে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনে সংবর্ধনা দেন।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে চলে যান। এর আগে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের পক্ষে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় প্রধান আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি জামায়াতে ইসলামীর সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগপত্রে তিনি দলটির নেতৃত্ব কাঠামো ও আদর্শিক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। পরে তিনি আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত হলেও, ২০২৪ সালের ১৭ আগস্ট সেই পদ থেকেও পদত্যাগ করেন।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের জন্ম ১৯৪৪ সালে, সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে। তিনি বিএ (অনার্স) ও এমএ ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮০ সালে যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার হন।
১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি লন্ডনে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। দেশে ফিরে ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন এবং পরবর্তী সময়ে ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগ ও ১৯৯৪ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
১৯৯০ সালে তিনি ‘দ্য ল’ কাউন্সিল’ নামে একটি আইনি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন এবং ২০০২ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে স্বীকৃতি পান।
বাংলাদেশের আইনি ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তার দীর্ঘ পথচলা ও ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: