[email protected] মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বৃহৎ ঐক্য গড়ছে ইসলামি দলগুলো

প্রতিদিনের বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ৪:১৪ পিএম

লোগো

সলামী রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কাছ থেকে সমদূরত্ব বজায় রেখে নতুনভাবে ঐক্য গড়ছে।

মধ্যপন্থি দলগুলোকেও এই উদ্যোগে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চলছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে পরিস্থিতি এবং বড় রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান বিবেচনায় রেখে তারা ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক মেরুকরণ নির্ধারণ করবে।

বিএনপি, জামায়াত ও নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)—এই তিন পক্ষই ইসলামী দলগুলোকে পাশে টানার চেষ্টা করছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নির্বাচনের বাইরে ধরে নিয়েই এসব উদ্যোগ চলছে।

ইসলামী দলগুলোর লক্ষ্য হলো বড় একটি জোট গঠন করে বিএনপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হওয়া, অথবা সমঝোতার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য আসন নিশ্চিত করা।

বিএনপি নির্বাচনের দাবি মেনে নেওয়ায় তাদের প্রতি কিছুটা ইতিবাচক মনোভাব থাকলেও, দলটি কত আসন ছাড় দেবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। ফলে ইসলামী দলগুলো নিজেরা এক হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

একইসঙ্গে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। জামায়াতের সঙ্গে আদর্শিক দ্বন্দ্ব থাকায় তাদের সঙ্গে আলোচনা হলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। এনসিপির সঙ্গেও আলোচনা চলছে, তবে দলটি মাঠপর্যায়ে এখনও তেমন প্রভাবশালী নয়।

সমন্বিত কৌশল ও নতুন জোট গঠন

চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলনসহ পাঁচটি দল—খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, ও নেজামে ইসলাম পার্টি—একযোগে নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং প্রতিটি আসনে একক প্রার্থী দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এক বাক্সে ইসলামপন্থিদের ভোট’ আনার লক্ষ্যে তারা একতাবদ্ধ হচ্ছে। এই পাঁচ দল বর্তমানে জামায়াতের পর বৃহত্তম ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের সাম্প্রতিক বৈঠকে সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন, সংসদের আগে স্থানীয় নির্বাচন এবং আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক পদ্ধতির দাবিতে ঐকমত্য হয়, যা বিএনপির সঙ্গে কিছু মতভেদের জন্ম দেয়।

জোট রাজনীতিতে পরিবর্তন

গত কয়েক মাসে ইসলামী দলগুলোর মধ্যে ব্যাপক যোগাযোগ ও বৈঠক হয়েছে। যদিও জামায়াতের সঙ্গে আদর্শিক বিরোধের কারণে বেশিরভাগ দল তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখছে। বিএনপির সঙ্গে বৈঠক হলেও জামায়াতের সঙ্গে একাধিক দফা আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। চরমোনাই পীরের দলের তরফ থেকে বিএনপিকে ‘চাঁদাবাজি ও দখলপনা’র জন্য দায়ী করে প্রকাশ্যে সমালোচনা করা হয়েছে।

সমমনাভিত্তিক পাঁচ দল জানিয়েছে, তারা যেকোনো জোটে একসঙ্গে যাবেন—এককভাবে কোনো দল সিদ্ধান্ত নেবে না। নিবন্ধিত ইসলামী ঐক্যজোট ও খেলাফত আন্দোলনকেও এ মোর্চায় অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে, তবে পূর্বের নির্বাচনে অংশ নেওয়া নেতাদের বাদ দিয়ে দল পুনর্গঠনের চেষ্টাও চলছে।

ভবিষ্যৎ পথনকশা

বিএনপি নির্বাচনে বড় দল হলেও ছোট দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার ক্ষেত্রে এখনো নিশ্চিত কিছু জানায়নি। ইসলামপন্থি দলগুলো মনে করছে, তাদের ভোটের মূল্য দিতেই হবে বিএনপিকে—মৌখিক আশ্বাস যথেষ্ট নয়।

জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সব দলের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। জোট গঠন হবে কিনা, তা নির্ভর করবে নির্বাচনের রাজনৈতিক পরিবেশের ওপর।

এক সিনিয়র ইসলামপন্থি নেতা বলেন, জোটের সময় ঘোষণা নয়, বাস্তবতা দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অতীতে দেখা গেছে, সময়ের আগেই গঠিত অনেক জোট টেকেনি। এখন প্রয়োজন ধৈর্য ও বাস্তবভিত্তিক কৌশল। 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর