বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম উজ্জ্বল তারকা সাকিব আল হাসান সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, রাজনীতিতে যুক্ত হওয়াকে তিনি কোনো ভুল সিদ্ধান্ত মনে করেন না।
দেশের একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে তিনি রাজনীতিতে আসার পেছনের কারণ, নিজের অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
সাকিব বলেন, “যদি আমার রাজনীতিতে আসাটা ভুল হয়ে থাকে, তাহলে কোনো ডাক্তার, ব্যারিস্টার, ব্যবসায়ী বা অন্য পেশার মানুষ রাজনীতিতে এলে সেটাও কি ভুল হবে? রাজনীতি করা প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। আমি যখন নির্বাচনে অংশ নিই, তখন বিশ্বাস করেছিলাম এটা সঠিক সিদ্ধান্ত। এখনও মনে করি, সেটা ভুল ছিল না। আমার উদ্দেশ্য ছিল মাগুরার মানুষের জন্য কিছু করা।”
তিনি দাবি করেন, মাগুরার জনগণ তার পাশে ছিল এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে বলেই তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। “আজও যদি নির্বাচন করি, সেখানে আমার বিকল্প পাওয়া কঠিন,” বলেন তিনি।
রাজনীতিতে আসার মূল উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সাকিব বলেন, “বড় পরিবর্তন আনতে হলে সিস্টেমের ভেতরে ঢুকতেই হয়। বাইরে থেকে যে সীমাবদ্ধতা থাকে, সেটা ভেতর থেকে কাজ করলে কাটানো সম্ভব। যারা এখন দেশ চালাচ্ছেন, তারাও তো সিস্টেমের ভেতর থেকেই এসেছেন।”
তিনি জানান, “আমি মাত্র ছয় মাস রাজনীতিতে ছিলাম। নির্বাচনের পর মাগুরায় গিয়েছিলাম তিন দিন, এরপর প্রায় পাঁচ-ছয় মাস ধরে ক্রিকেটে ব্যস্ত ছিলাম। ফলে রাজনীতি বা এলাকার পরিস্থিতি বুঝে ওঠার সময়ই পাইনি।”
সাকিব আরও বলেন, “তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছিলেন, ‘তোমাকে রাজনীতি করতে হবে না, তুমি শুধু ক্রিকেট খেলো।’ আমি সেই কথাই অনুসরণ করেছি।
কোনো গোপন পরিকল্পনা ছিল না, অগ্রাধিকার ছিল ক্রিকেট। রাজনীতিতে সময় দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলার পর।”
সমালোচনার জবাবে সাকিব বলেন, “যারা বলছেন আমার রাজনীতিতে আসা ভুল ছিল, তারা বেশিরভাগই মাগুরার ভোটার নন।
মাগুরার মানুষ এখনও আমাকে বিশ্বাস করে। আমি রাজনীতিতে এসেছিলাম শুধুই তাদের জন্য কাজ করার উদ্দেশ্যে, কোনো ব্যক্তিগত লাভের জন্য নয়।”
সাকিবের কথায় পরিষ্কার, রাজনীতিতে তার অংশগ্রহণ ছিল সুপরিকল্পিত এবং দীর্ঘমেয়াদি চিন্তার ফল। যদিও সময় ও পরিস্থিতির কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি, তবুও মাগুরার মানুষের বিশ্বাসই তাকে সামনে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে।
এসআর
মন্তব্য করুন: