protidinerbangla22@gmail.com রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫
২৩ চৈত্র ১৪৩১

যেসব উপদেষ্টাকে সরিয়ে দিতে পরামর্শ দিলেন মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩১ মার্চ ২০২৫ ১২:০২ এএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন, এমন উপদেষ্টাদের অপসারণের পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উচিত সেসব উপদেষ্টাকে অপসারণ করা, যারা সরকারের নিরপেক্ষতা নষ্ট করছেন এবং সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন।’

রোববার (৩০ মার্চ) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে শঙ্কা

ফখরুল বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচনের আগে সরকার নিরপেক্ষতা হারালে বিএনপি তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। আমরা সরকারের পূর্ণ নিরপেক্ষতা প্রত্যাশা করি, বিশেষ করে অধ্যাপক ইউনূসের কাছ থেকে। যদি তিনি অনুভব করেন যে তার মন্ত্রিসভার কেউ নিরপেক্ষতা নষ্ট করছেন, তবে তাদের অপসারণ করা উচিত। তাকে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ থাকতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেন, তাহলে জনগণের মধ্যে এমন ধারণা তৈরি হবে যে এ সরকার নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।’

উপদেষ্টাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমাদের হতাশ করেছে। কিছু উপদেষ্টার কার্যক্রম দেখে আমরা সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে গভীর সন্দেহ প্রকাশ করছি। তবে এখনই সরকার নিরপেক্ষ না, এমন কোনো পরিস্থিতি আমরা দেখছি না। যদিও অনেক কিছু আমরা ওভারলুক করে যাচ্ছি।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকারের কিছু উপদেষ্টা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের স্বার্থে সরকারি সম্পদের অপব্যবহার করছেন, যা নিরপেক্ষতার পরিপন্থী এবং এটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নিত করছে। নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে উন্নয়ন প্রকল্প ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য তহবিল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, যা স্পষ্টভাবে নিরপেক্ষতার নীতির লঙ্ঘন।’

নির্বাচনি রোডম্যাপ ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা এখনো একটি সুস্পষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ দেননি, যা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সহায়ক হতে পারত। একটি নির্ভরযোগ্য রোডম্যাপ থাকলে চলমান রাজনৈতিক সংকট প্রশমিত হতো এবং রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনি প্রস্তুতিতে মনোযোগী হতে পারত।’

এনসিপির রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও তারেক রহমান প্রসঙ্গ

এনসিপি কি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে, এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি এই বিষয়ে মন্তব্য করব না। তবে পত্রপত্রিকা ও মিডিয়ায় এ ধরনের কিছু নিউজ প্রকাশিত হয়েছে, যা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।’

তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেখুন, সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা একটা রাজনৈতিক দলের পক্ষে দেওয়া খুব কঠিন হয়। বিশেষ করে যখন আমাদের স্ট্র্যাটেজি এখনো নির্ধারিত হয়নি। আমরা আমাদের নির্বাচনের স্ট্র্যাটেজি এখনো চূড়ান্ত করিনি। যখন তা নির্ধারণ করতে পারব, তখন সুস্পষ্টভাবে এই বিষয়ে বলতে পারব।’

চীন সফর নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি

অধ্যাপক ইউনূসের চীন সফর প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উনার (প্রধান উপদেষ্টার) চীন সফরকে আমি ইতিবাচকভাবে দেখি। কারণ ভূরাজনৈতিকভাবে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে ঘোষিত নীতিতে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছি যে “উই আর ফ্রেন্ডস টু অল।” আমরা চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, পাকিস্তান—সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চাই।

আমরা একটি ছোট দেশ। আমাদের সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের স্বার্থে, বিশেষ করে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত, পাকিস্তান ও মিয়ানমারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর