গত জুলাই ও আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা করেছিলেন বলে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনা ধারণা করেছিলেন যে ‘হেভি ইউনিট’ মোতায়েন করা হলে সাধারণ বিক্ষোভকারীরা সরে যাবে এবং শুধু জিহাদিরা রাস্তায় থাকবে।
এই ধারণার ভিত্তিতেই তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনা নিয়মিতভাবে ডিজিএফআই, এনএসআই ও পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) কাছ থেকে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করতেন এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে ও ফোনে যোগাযোগ রাখতেন।
জাতিসংঘের তদন্ত দল কল লগ বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
৪ আগস্ট শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা প্রধান এবং স্বরাষ্ট্র, শিক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে—
ওই রাতেই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে আরেকটি বৈঠক হয়, যেখানে আন্দোলনকারীদের ঢাকায় প্রবেশ ঠেকাতে কারফিউ জারির বিষয়েও আলোচনা হয়।
জাতিসংঘ দল ৫ আগস্টের সকালে এবং রাত ১২:৫৫ মিনিটে বিজিবির মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো দুটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার অনুলিপি পেয়েছে।
প্রথম বার্তায় আন্দোলনকারীরা ঢাকায় প্রবেশের বিকল্প রুট নিয়ে আলোচনা করছিলেন।
দ্বিতীয় বার্তায় একটি ভিডিও ছিল, যেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতিরক্ষা লাইন অতিক্রম করার কৌশল নিয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়।
জাতিসংঘ আরও জানিয়েছে, তাদের তদন্ত দলের সঙ্গে এক কর্মকর্তা কথা বলেছেন, যিনি ৫ আগস্ট শেখ হাসিনাকে ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে জানিয়েছিলেন যে, সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী হচ্ছে না।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিক্ষোভ দমনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা সরাসরি শেখ হাসিনার কাছ থেকে এসেছিল। তবে, শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনাগুলো কতটা সফল হয়েছিল, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে মতবিরোধ ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: