কুমিল্লা – বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ সম্প্রতি কুমিল্লা মহানগরের আওয়ামী লীগ অফিসকে ‘পাবলিক টয়লেট’ হিসেবে রূপান্তরের ঘোষণা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত শুরু হওয়া বিক্ষোভে, আন্দোলনের মহাকন্বেতা মো. আবু রায়হান সামনে এসে ঘোষণা করেন, অফিসের সামনের খালি স্থান ইতিমধ্যেই সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ডে রূপান্তরিত করা হয়েছে এবং আর তাড়াতাড়ি সময়ের মধ্যে ভবিষ্যতে পুরো অফিসটিই এই নামে পরিবর্তিত হবে।
আবু রায়হানের মতে, “আওয়ামী লীগের নাম ও ছাপ কুমিল্লার মানুষের ওপর আর প্রত্যাশিত নয়।
তাই আমরা আগামী সপ্তাহে অফিসটিকে ‘পাবলিক টয়লেট’ হিসেবে তৈরি করে ফেলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।
আন্দোলনের অন্যান্য নেতাকর্মীদের সাথে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সচিব রাশেদুল হাসানসহ বেশ কিছু সদস্য।
আলোকপাত অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে কুমিল্লা মহানগরের আওয়ামী লীগ অফিস ও নিকটবর্তী ভবনের নৌকার প্রতীক ভেঙে ফেলা হয়।
এই সঙ্গে ঘটে যাওয়া বিক্ষোভ সমাবেশে আন্দোলনের নেতারা জোরালো বক্তব্য রাখেন এবং প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
প্রাসঙ্গিক সূত্রে জানা যায়, ২১ অক্টোবর ২০২১-এ কুমিল্লা মহানগরের এই ভবনকে নতুন আওয়ামী লীগ অফিস হিসেবে ঘোষণা করা হয়, যেখানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন।
ভবনের নান্দনিক কারুকাজ, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও পরিকল্পনার পেছনে ছিলেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও তৎকালীন সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।
বর্তমানে বাহার এবং তার মেয়ে, একসময় সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন, ভারতের অবস্থানকারীদের মাঝে রয়েছেন। অধিকাংশ নেতাকর্মীর আত্মগোপন থাকার কারণে এ বিষয়ে দলের কোনো উক্তি পাওয়া যায়নি।
এরপরের দিন, বুধবার রাত থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতারা কুমিল্লা নগরীর আওয়ামী লীগ অফিস ও বাহারের আবাসস্থলে হামলা ও আগুন ধরানোর ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সমাবেশে আন্দোলনের সদস্যরা কুমিল্লা জেলা আদালত প্রাঙ্গণ এবং নগর উদ্যানে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের দুইটি ম্যুরালকে বুলডোজারের সহায়তায় ধ্বংস করে ফেলার কর্মকাণ্ডও পরিচালনা করেন।
সেই সঙ্গে, আদালতের চত্বরে আন্দোলনের নেতারা ২০ জন আইনজীবীকে ‘ইন্ধনদাতা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোষর’ নামে ব্যানারসহ আদালত অঙ্গন থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান।
নাম ও ছবিসহ ব্যানার আইনজীবী সমিতির সামনে টানিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের ক্ষোভের পরিচয় দেন।
এভাবেই আন্দোলনের শীর্ষ নেতারা কুমিল্লায় আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠান ও তার প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে নানা রকম নিন্দা ও বিক্ষোভের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন, যা সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: