বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর একটি রিপোর্টে অর্থ পাচার এবং বিলাসবহুল সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এফবিআইয়ের অনুসন্ধানে জয়ের ৮টি বিলাসবহুল গাড়ি ও ৫টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। তবে জয় এই রিপোর্টকে ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিকর এবং সম্পূর্ণ বানোয়াট বলে দাবি করেছেন।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জয় বলেন, “এফবিআইয়ের তথাকথিত রিপোর্ট ভুলে ভরা এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে তৈরি। এতে কিছু গুরুতর ভুল রয়েছে যা রিপোর্টটির মিথ্যা প্রমাণ করে।”
এফবিআইয়ের অভিযোগ
এফবিআই দাবি করেছে, শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩০ কোটি ডলার (প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা) পাচার করেছেন। এছাড়া জয়ের মালিকানাধীন ৮টি বিলাসবহুল গাড়ি এবং হংকং ও কেম্যান আইল্যান্ডে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছে সংস্থাটি।
গাড়িগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য: ম্যাকলারেন ৭২০এস (মূল্য ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার), মার্সিডিজ বেঞ্জ এএমজি, জিটিলেক্সাস জিএক্স ৪৬০, রেঞ্জ রোভার।
এছাড়া জয়ের সঙ্গে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা এবং সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের তথ্যও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
জয়ের প্রতিক্রিয়া
জয় এই অভিযোগগুলোকে সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে বলেছেন, “রিপোর্টে যে এজেন্ট এবং আইনজীবীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের একজন অনেক আগে অবসর নিয়েছেন এবং অন্যজন ২০১৩ সালে মারা গেছেন। এটা প্রমাণ করে রিপোর্টটি অবৈধ ও মনগড়া।”
তিনি আরও বলেন, তার কোনো অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই এবং যেসব সম্পদের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলোর বেশিরভাগই পুরনো ও অনেক আগে বিক্রি হয়ে গেছে।
বাংলাদেশে তদন্ত শুরু
এফবিআইয়ের রিপোর্টের ভিত্তিতে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে। দুদক ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্থার কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
সজীব ওয়াজেদ জয় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রমাণ করতে কর্তৃপক্ষকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। তিনি বলেছেন, “যদি কারও কাছে প্রমাণ থাকে, তা সামনে আনুন। সব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ হবে।”
এই ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এফবিআই ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এখনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এসআর
মন্তব্য করুন: