সাধারণ মানুষ সংস্কার বোঝে না: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সাধারণ মানুষ সংস্কারের ধারণা পুরোপুরি বোঝে না।

তাদের কাছে সংস্কার মানে শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ, দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি না পাওয়া, চুরি-ডাকাতি বন্ধ হওয়া এবং ঘুষের সংস্কৃতি দূর হওয়া।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার সাকোয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফখরুল বলেন, "পালিয়ে গিয়ে শেখ হাসিনা ভারত থেকে ষড়যন্ত্র করছেন এবং মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন।" তিনি আরও বলেন, "আমাদের হিন্দু ভাইয়েরা এখানে বসে আছেন। তারা বলে, তাদের ওপর কোনো অত্যাচার বা নির্যাতন হচ্ছে না। এই অঞ্চলের মানুষ শান্তিপ্রিয়। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই একসঙ্গে এখানে বসবাস করেন।"

শেখ হাসিনার পালানোর বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, "তিনি বলেছিলেন, আমি পালাবো না, আমি ভয় পাবো না। কিন্তু যখন জীবন বাঁচানোর সময় এল, তখন নেতাকর্মীসহ সবাইকে বিপদে ফেলে তিনি পালিয়ে গেছেন। এটি হলো ফ্যাসিবাদের পরিণতি।"

বিএনপি মহাসচিব বলেন, "গত ১৫ বছর ধরে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আমরা দেশের জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। আমি আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব—এটাই আমাদের দাবী। কিছু মানুষ মনে করেন, আমরা ভোটের তাড়া দিচ্ছি। কিন্তু আসলে আমরা ভোটের অধিকার চাই, যাতে জনগণ সঠিক প্রার্থী নির্বাচিত করতে পারে, যারা দেশের উন্নতি এবং সঠিক পরিচালনা নিশ্চিত করবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা সংস্কার চাই। আমাদের নেত্রী ২০১৬ সালে ভিশন বাংলাদেশ ২০৩০ দিয়েছিলেন, আর আমাদের নেতা তারেক রহমান ২০২২ সালে ৩১ দফা দিয়েছেন। এই ৩১ দফা সংস্কারের অংশ।"

জনসভায় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন, সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার মো. নওশাদ জমির, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সভাপতি ফেরদৌস ওয়াহিদ রাসেল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুব রহমান প্রমুখ।

সকাল থেকেই জনসভাস্থলে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন এবং দুপুরের মধ্যেই জনসভাস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। সনাতন ধর্মালম্বী, উপজাতি ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জনসভায় যোগ দেন। বোদা-দেবীগঞ্জ উপজেলা ও পঞ্চগড় পৌর শাখা বিএনপি এই জনসভার আয়োজন করে।