খালেদা জিয়া ২৯ ডিসেম্বর লন্ডন যাচ্ছেন

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামী ২৯ ডিসেম্বর লন্ডন যেতে পারেন, যদি তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকে এবং নতুন কোনো সমস্যা তৈরি না হয়।

ওইদিন দিনে কোনো একটি ফ্লাইটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করার সম্ভাবনা রয়েছে। বেগম জিয়ার সঙ্গে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকসহ মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা থাকবেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রোববার (২২ ডিসেম্বর) রাতে সাংবাদিকদের বলেন, "বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৯ ডিসেম্বর লন্ডন যেতে পারেন। যদিও এটি চূড়ান্ত নয়, তবে এ ধরনের একটি পরিকল্পনা রয়েছে।"

খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত এবং চিকিৎসকদের মতে, তার লিভার প্রতিস্থাপন প্রয়োজন। ৭৯ বছর বয়সী বেগম জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ফুসফুস, কিডনি, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন গত ২৯ অক্টোবর সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে প্রথমে 'লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে' লন্ডন নেয়া হবে, পরে সেখান থেকে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি মাল্টিডিসিপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টারে পাঠানো হতে পারে।

এদিকে, খালেদা জিয়ার নবায়নকৃত মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) আগস্ট মাসে হস্তান্তর করা হয়। নভেম্বরে তার যুক্তরাজ্যের ভিসার কাজ শুরু হয়, এবং ইতোমধ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সৌদি আরবের ভিসাও পেয়েছেন। চিকিৎসার পর সৌদি আরব থেকে ওমরাহ পালন করতে তিনি দেশে ফিরে আসতে পারেন।

খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে অন্তত ১৫ জনের একটি তালিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। ৩০ অক্টোবর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার যুক্তরাজ্যে যাওয়ার জন্য সরকার সহায়তা করবে। সফরকারীদের মধ্যে বেগম জিয়ার পরিবার এবং তার সহকারী রয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই খালেদা জিয়া একাধিক মামলার পরোয়ানা মাথায় নিয়ে লন্ডন যান এবং ১৮ অক্টোবর দেশে ফিরে আসেন। সেখানে তিনি ডা. হ্যাডলি ব্যারির চিকিৎসা নেন। এরপর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যান, পরে ২০২০ সালের মার্চে তিনি শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পান। চলতি বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বেগম জিয়াকে স্থায়ী মুক্তির আদেশ দেন।