চট্টগ্রাম নগরের বন্দর থানার আনন্দবাজার এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে মো. জসিম উদ্দিন (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে আনন্দবাজারের সিটি করপোরেশন ময়লার ডিপো সংলগ্ন টিসি কলোনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত জসিম উদ্দিন চট্টগ্রাম বন্দর থানা কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জসিম ময়লার ভাগাড় থেকে বিভিন্ন কোম্পানির মেয়াদোত্তীর্ণ ও উচ্ছিষ্ট খাবার সংগ্রহ করে বিক্রির ব্যবসা করতেন। এ নিয়ে স্থানীয় একটি পক্ষের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব চলছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ব্যবসায়িক বিরোধ থেকেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
তবে জসিমের পরিবারের দাবি, এটি কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। তার চাচা বশির আহমদ অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণেই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। জসিম বিএনপি নেতা আমির খসরুর অনুসারী হওয়ায় এটি একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হতে পারে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদ এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, "ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মীকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাই।"
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ জানান, মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে জসিমকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে তার শ্বাসনালী কেটে যায়, যা তার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
পুলিশ আরও জানায়, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
জসিম উদ্দিন ভোলার বাসিন্দা হলেও চট্টগ্রামের আনন্দবাজার টিসি কলোনিতে বসবাস করতেন। তার বাবা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের অস্থায়ী কর্মী। জসিমের রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড তাকে স্থানীয়ভাবে পরিচিত করে তুলেছিল।
এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবার ও বিভিন্ন মহল দ্রুত ন্যায়বিচার এবং প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: