বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, সব ধরনের অস্পষ্টতা কাটিয়ে অচিরেই নির্বাচনী রোডম্যাপে যাত্রা শুরু করবে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, এই যাত্রায় দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ আমাদের সঙ্গী হবে, তাই দলের নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থাকতে এবং তাদের সমর্থন সংগ্রহে সর্বোচ্চ চেষ্টা করার আহ্বান জানান।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন তারেক রহমান। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপি’র সিনিয়র নেতারাও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
তারেক রহমান তার বক্তব্যে বলেন, "লাখো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়ের ৫৪তম বার্ষিকীতে আমি স্বাধীনতাকামী জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।" তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তবে বারবার দেশবিরোধী অপশক্তি স্বাধীনতা ও গৌরব বিকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে, বিশেষ করে পলাতক স্বৈরাচারী শাসক দেশকে বিপদের মুখে ফেলেছিল। দেড় দশক ধরে বাংলাদেশের গৌরব ক্ষুণ্ন হয়েছে, তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকার পালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে জনগণের স্বাধীনতা রক্ষা পেয়েছে।
তিনি বলেন, "এবারের বিজয় দিবস আমাদের জন্য অনেক বেশি গৌরবময় ও তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি আমাদের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামের ফলস্বরূপ এসেছে। আমি বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে স্বাধীনতা দিবস শুধু উদযাপনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এটি জনগণের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতার প্রতীক হবে।"
তারেক রহমান আরও বলেন, "গণতন্ত্রের কেন্দ্রে জনগণ রয়েছে। রাষ্ট্র ও জনগণকে শক্তিশালী করতে হলে, জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে সরকার গঠন করতে হবে, যার মাধ্যমে জবাবদিহিতা কার্যকরী হবে এবং জনগণের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে।"
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে সমালোচনা করে তিনি বলেন, "অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের কথা বলছে, তবে জনগণের অধিকার সুরক্ষা এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার জন্য তাদের রোডম্যাপের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা উচিত। প্রশাসনিক কার্যক্রমের মধ্যে কোনো অস্বচ্ছতা থাকলে, তা জনগণের কাছে গণআকাঙ্ক্ষা বিরোধী হিসেবে পরিগণিত হবে।"
ডেঙ্গুতে মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, "দেশে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ডেঙ্গুতে মৃত্যু ঘটছে এবং চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে জনগণ হিমশিম খাচ্ছে। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। জনগণ জীবিকা নির্বাহ করতে লড়াই করছে। এসব পরিস্থিতিতে, অন্তর্বর্তী সরকার যদি দ্রুত সংস্কার না করে, তবে জনগণ সরকারের প্রতি তাদের আস্থা হারিয়ে ফেলতে পারে।"
তারেক রহমান আরও বলেন, "লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমাদের ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা একটি বৈষম্যহীন, মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে। এই লক্ষ্য অর্জনে বিএনপি ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যার বাস্তবায়নে প্রতিটি নাগরিকের অংশগ্রহণ অপরিহার্য।"
আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দও বক্তব্য রাখেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: