বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ মন্তব্য করেছেন যে, বর্তমান সংবিধান সময়োপযোগী নয়।
তিনি প্রস্তাব করেছেন, মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান সংবিধানে যুক্ত করা উচিত।
শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের পথে: সংবিধান সংস্কার প্রস্তাব’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, "আমাদের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, এবং দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান। সুতরাং, আমাদের সংবিধানে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কোন ধরনের কটূক্তি করা হলে শাস্তির বিধান থাকা উচিত। আমি মানসিকভাবে মেনে নিতে পারি না যে, এমন দেশে যেখানে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, সেখানে মহানবী (সা.)-এর অবমাননা রোধের জন্য কোনো শাস্তির বিধান থাকবে না।"
পার্থ আরও বলেন, "যে দেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি কটূক্তি করলে ৫-১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে, সেখানে মহানবী (সা.)-এর প্রতি কটূক্তি করলে শাস্তি কেন হবে না? মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কোনো ধরনের বাজে কথা বলার অনুমতি থাকা উচিত নয়। এটি সংবিধানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকা উচিত।"
তিনি বলেন, "আমাদের সংবিধানে স্পষ্ট বলা আছে, 'রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম', তবে অন্যান্য ধর্মের মানুষদেরও সমান মর্যাদা এবং অধিকার নিশ্চিত করা হবে।"
এছাড়া, পার্থ দাবি করেন যে, গ্লোবালাইজেশনের নামে আধুনিকতার প্রবণতায় ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি আক্রমণ বাড়ছে, বিশেষ করে গণজাগরণ মঞ্চের পর থেকে বিভিন্ন পক্ষ মহানবী (সা.)-কে কটূক্তি করার চেষ্টা করছে।
মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার আদলে ইসলামিক আদালত প্রতিষ্ঠারও প্রস্তাব দেন পার্থ, যেগুলো ইসলামিক আইন অনুসারে সমস্যার সমাধান করতে আগ্রহী মানুষদের জন্য তৈরি করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, "আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং ধর্ম থেকে দূরে সরে যাওয়ার পরিবর্তে, এখনই আমাদের মূলে ফিরে আসা উচিত। আমাদের ঐতিহ্য এবং ধর্মকে পুনরুদ্ধার করতে হবে।"
পার্থ বর্তমান সংবিধানকে "ফ্যাসিস্ট বানানোর একটি বড় কারখানা" হিসেবে অভিহিত করে বলেন, বিগত সরকার এই সংবিধান ব্যবহার করে জনগণের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে এবং গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তাই, সংবিধান সংস্কার অত্যন্ত জরুরি।
তিনি আরও বলেন, "একজন নির্বাচিত সরকারই সংবিধান সংস্কারের নৈতিক অধিকার রাখে।"
প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, বিচারপতি নিয়োগ, এবং সংসদ সদস্যদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে সংবিধানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন পার্থ।
অন্যদিকে, তিনি রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে বৈষম্য রোধ করার জন্য সংবিধানে একটি স্পষ্ট বিধান রাখার প্রস্তাব দেন।
বিজেপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, "যেমন জার্মানিতে সংবিধান সংশোধনের বিধান রয়েছে, বাংলাদেশেও এরকম একটি বিধান থাকা উচিত, যাতে কোনো দল দেশের মানুষের জন্য ক্ষতিকর হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।"
বিজেপির মহাসচিব আবদুল মতিন সাউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মতিন প্রকাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস মাতাব্বর, যুব সংহতির আহ্বায়ক মো. হারুন–অর–রশিদ, এবং ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম।
এসআর
মন্তব্য করুন: