একাত্তরে ভুল প্রমাণিত হলে জাতির কাছে ক্ষমা চাইবে জামায়াত: শফিকুর রহমান

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামী কোনো ভুল করে থাকলে এবং তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলে দলীয়ভাবে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া হবে।

মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের একটি রেস্টুরেন্টে প্রবাসী বাংলা মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “যুক্তরাজ্যের আদালতে চৌধুরী মাইনুদ্দিনের বিচার প্রক্রিয়া এবং রায় নিয়ে আমাদের দেশে ওয়ার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের নামে যে বিচার কার্যক্রম হয়েছে, সেটি এখানকার বিচারপতিরা ‘জেনোসাইড অব জাস্টিস’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

গত ১৫ বছর আমাদের উপর দমন-পীড়ন চলেছে। অফিস খুলতে দেওয়া হয়নি, বক্তব্য রাখতে দেওয়া হয়নি, র্যালি করার সুযোগও দেওয়া হয়নি।

ফলে আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে জাতির কাছে পৌঁছানোর সুযোগ পাইনি।”

তিনি দুর্নীতি এবং জাতিগত অনৈক্যের কারণে দেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “দুর্নীতি আমাদের জন্য জাতীয় লজ্জার বিষয়।

যারা সমাজ পরিচালনা করেন, তাদের পরিচ্ছন্নতা ছাড়া সমাজ কখনো উন্নত হতে পারে না। যুক্তরাজ্য দুর্নীতি দমনে অনেকটাই সফল হওয়ায় তারা সারা বিশ্বে একটি মর্যাদাপূর্ণ স্থান অর্জন করেছে, যা আমরা পারিনি।”

ডা. শফিকুর রহমান ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “এই অভ্যুত্থানে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল। এমনকি প্রবাসীরাও যার যার সাধ্য অনুযায়ী অবদান রেখেছেন।”

প্রবাসীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রেমিটেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশকে প্রবাসীরা যে অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন তা অসাধারণ।

আমি তাদের ‘ইন্টেলিজেন্স রেমিটেন্স’ পাঠানোর আহ্বান জানাই, যা দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এভাবেই আমরা স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে পারব।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর ইউরোপের মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা। আবু সালেহ ইয়াহইয়ার পরিচালনায় আয়োজনে কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ইমাম উদ্দিন এবং দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন শিল্পী কামাল হোসাইন। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বাংলা মিডিয়ার পঞ্চাশেরও বেশি সাংবাদিক এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।