[email protected] মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
১৬ পৌষ ১৪৩১

দিল্লির লুটিয়েন্সে বাংলোতে আছেন শেখ হাসিনা

প্রতিদিনের বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ৭:৩২ পিএম

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির লুটিয়েন্স বাংলো জোনে একটি নিরাপদ বাড়িতে অবস্থান করছেন।

ভারত সরকারের তত্ত্বাবধানে এ ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভারতীয় অনলাইন সংবাদপত্র দ্য প্রিন্ট বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে।

ভারতে মন্ত্রী, জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য লুটিয়েন্সে যে বাংলোগুলো বরাদ্দ করা হয়, মর্যাদা রক্ষার্থে শেখ হাসিনাকে সে ধরনের পূর্ণ আকারের বাংলোই দেওয়া হয়েছে।

ভারতে মন্ত্রী, জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য লুটিয়েন্সে যে বাংলোগুলো বরাদ্দ করা হয়, মর্যাদা রক্ষার্থে শেখ হাসিনাকে সে ধরনের পূর্ণ আকারের বাংলোই দেওয়া হয়েছে।

তবে গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার স্বার্থে দ্য প্রিন্ট সঠিক ঠিকানা বা রাস্তার বিবরণ প্রকাশ করেনি। তবে লুটিয়েন্স দিল্লি একটি উচ্চ সুরক্ষিত এলাকা, যেখানে অনেক সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্যের বাড়ি রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সূত্র নিশ্চিত করেছে, সঠিক প্রটোকল মেনে, শেখ হাসিনা মাঝে মাঝে লোধি গার্ডেনে হাঁটাহাঁটিও করেন। ওই সূত্র বলেছে, ‘তার জন্য শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।

সাধারণ পোশাকের নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে সার্বক্ষণিক ঘিরে রাখেন। একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্ব হিসেবে তিনি এই স্তরের সুরক্ষা পাচ্ছেন।

তিনি এখানে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন। তার থাকার জন্য সব ব্যবস্থাই এখানে করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা এক বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট ঢাকায় তার বাসভবন থেকে ভারতে পালিয়ে যান।

সূত্র অনুযায়ী, শেখ হাসিনা পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টা পর তার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিসহ ৫ আগস্ট রাতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি বিমানে হিন্দন বিমানবন্দরে গিয়ে পৌঁছন।

তবে তিনি সেই বিমানঘাঁটিতে দুই দিনের বেশি থাকেননি। পৌঁছনোর দিনই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা তার সঙ্গে দেখা করেন।

দ্বিতীয় একটি সূত্রটি জানিয়েছে, ‘বিমানঘাঁটিতে বেশিদিন থাকার মতো সুযোগ-সুবিধা ছিল না।

তাই কয়েক দিনের মধ্যেই তাকে একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তারপর তাকে লুটিয়েন্স দিল্লিতে নিরাপদ এলাকায় বাড়ির ব্যবস্থা করা হয়।’

শেখ হাসিনা কতটা বাড়ির বাইরে যান জিজ্ঞাসা করা হলে সূত্রটি জানায়, ‘যখন প্রয়োজন হয় তখন মূল নিরাপত্তা দলকে অবহিত করা হয় এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

যদিও ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সরকারকে শেখ হাসিনার অবস্থান জানায়নি। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আগস্ট মাসে সংসদে বলেছিলেন, শেখ হাসিনা ‘ওই মুহূর্তে’ ভারতে আসার অনুমতি চেয়েছিলেন।

দ্য প্রিন্ট ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। উত্তর পাওয়া গেলে তারা পরে জানাবে।

এদিকে হাসিনার সঙ্গে তার বোন ও ব্রিটিশ নাগরিক শেখ রেহানা এবং তার মেয়ে ও যুক্তরাজ্যে লেবার পার্টির নেতা টিউলিপ সিদ্দিকও ভারতে গেছেন। তবে এটা স্পষ্ট নয় যে তিনি তার বোনের সঙ্গে একই বাড়িতে অবস্থান করছেন কি না।

শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদও দিল্লিতে থাকেন, তিনি দিল্লিতে অবস্থিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক। তিনি এই পদে আসীন প্রথম বাংলাদেশি।

২০১০ সালে শেখ হাসিনার প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) গত সপ্তাহে তিনিসহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও আরো ৪৪ জনের বিরুদ্ধে জুলাই ও আগস্ট মাসে ছাত্র আন্দোলনের সময় কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ওই আন্দোলনের কারণেই তিনি ক্ষমতা হারান।

হাসিনা ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে আইসিটির তদন্তে ৬০টিরও বেশি মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল কর্তৃপক্ষকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন।

 

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর