জনবহুল দেশের আরামদায়ক গণপরিবহন হিসেবে ট্রেন জনপ্রিয় হলেও, বাংলাদেশে রেলপথ আজও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন থেকে অনেক দূরে।
আধুনিক ও বিলাসবহুল কোচ, দ্রুতগতির ইলেকট্রিক ট্রেন কিংবা নতুন রুটের সংযোজন—কোনোটাই তেমনভাবে হয়নি। উল্টো বর্তমানে ইঞ্জিন, কোচ ও ক্রু সংকটে দেশের ৭৯টি ট্রেন বন্ধ রয়েছে।
রেল কর্মকর্তাদের দাবি, যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে তারা নিরলস কাজ করছেন। তবে বাজেট সংকুলানের অভাবে এবং ইঞ্জিন আমদানিতে দীর্ঘ সময় লাগায় সংকট কাটিয়ে ওঠা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, “আমাদের দেশে ইঞ্জিন তৈরি হয় না। বিদেশ থেকে আনতে হলে টেন্ডারসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া মিলিয়ে কমপক্ষে দুই থেকে তিন বছর সময় লেগে যায়।”
বর্তমানে সারাদেশে মোট ২৭৫টি ট্রেন চালু আছে। এর মধ্যে ১২০টি আন্তঃনগর, ১২৮টি কমিউটার ও মেইল ট্রেন, ৮টি কনটেইনার ট্রেন এবং ১৯টি মালবাহী ট্রেন।
অন্যদিকে, পূর্বাঞ্চলে ৩৬টি ও পশ্চিমাঞ্চলে ৩৭টি লোকাল ও মিশ্র ট্রেন বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত রুটের বন্ধন, মিতালি ও মৈত্রী এক্সপ্রেসসহ ছয়টি আন্তঃদেশীয় ট্রেনও বন্ধ রয়েছে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. মো. হাদিউজ্জামান বলেন, “রেলের প্রস্তুতি বা পরিকল্পনার ঘাটতি আছে। মাস্টারপ্ল্যান থাকলেও যথাসময়ে সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।”
রেলের বহরে বর্তমানে মোট ইঞ্জিন রয়েছে ২৯৭টি। এর মধ্যে ১৬৭টি মিটারগেজ এবং ১৩০টি ব্রডগেজ। কিন্তু এর মধ্যে প্রায় ৫১ শতাংশ ইঞ্জিনই ২০ বছরের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল পার করে ফেলেছে।
বিভিন্ন বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়:
রেলওয়ের তথ্যমতে, বন্ধ হওয়া ট্রেনগুলোর মধ্যে রয়েছে:
বেশিরভাগ ট্রেন বন্ধ হয়েছে ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের আগস্টের মধ্যে, ইঞ্জিন, কোচ ও জনবল সংকটের কারণে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক সময়মতো সিদ্ধান্ত না নিলে রেলের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। জনসংখ্যা ও যাত্রীর চাপে ট্রেনের জনপ্রিয়তা বাড়লেও, কাঠামোগত উন্নয়ন না হলে ভবিষ্যতে সেবার মান আরও নেমে যেতে পারে।
এসআর
মন্তব্য করুন: