সময়ের আগেই জ্বালানি দক্ষতার লক্ষ্য অর্জন করবে বাংলাদেশ : আইইইএফএ

গত দশকে জ্বালানি দক্ষতা বাড়াতে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের ইতিবাচক

ফল পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। এই ধারা অব্যাহত থাকলে, নির্ধারিত সময়ের আগেই দেশটি জ্বালানি দক্ষতার লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হবে—এমনটাই উঠে এসেছে একটি সাম্প্রতিক গবেষণা প্রতিবেদনে।

ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইইএফএ) প্রকাশিত “বাংলাদেশ এনার্জি এফিশিয়েন্সি গোলস উইথিন রিচ” শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সাল থেকে জ্বালানি ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানি ব্যয় কমাতে পেরেছে। এর মাধ্যমে দেশটি একদিকে যেমন অর্থনৈতিক সুবিধা পেয়েছে, অন্যদিকে পরিবেশগত চাপও হ্রাস পেয়েছে।

প্রতিবেদনের লেখক এবং আইইইএফএর দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বাংলাদেশবিষয়ক প্রধান জ্বালানি বিশ্লেষক শফিকুল আলম জানান, ২০১৪–১৫ অর্থবছর থেকে ২০২৩–২৪ সময়কালে দেশের জ্বালানি দক্ষতা প্রায় ১৩.৬৪ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে ২০৩০ সালের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্য ২০ শতাংশ।

শুধু ২০২৩–২৪ অর্থবছরেই জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধির কারণে প্রায় ৭.২ মিলিয়ন টন তেলসমতুল্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমেছে। এর ফলে আনুমানিক ৩.৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ জ্বালানি আমদানি ব্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ২০১৬–১৭ অর্থবছরের পর কিছু সময় জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধির গতি কমে গেলেও, ২০২১–২২ অর্থবছরের পর বৈশ্বিক জ্বালানির দাম বৃদ্ধি এবং সরবরাহ সংকট পরিস্থিতিকে বদলে দেয়। এতে জ্বালানি দক্ষতা জাতীয় অগ্রাধিকারের বিষয় হয়ে ওঠে। ২০১৬ সালে প্রণীত এনার্জি এফিশিয়েন্সি অ্যান্ড কনজারভেশন মাস্টার প্ল্যান এ সংকট মোকাবিলায় একটি কার্যকর ভিত্তি তৈরি করে।

বর্তমানে বাংলাদেশে জ্বালানি দক্ষতার বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি প্রায় ১.৫২ শতাংশ। এই হারে অগ্রগতি অব্যাহত থাকলে, ২০৩০ সালের লক্ষ্য নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক বছর আগেই অর্জন করা সম্ভব হতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনের প্রধান সুপারিশসমূহ

ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে দেশজুড়ে জ্বালানি দক্ষতা সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো

বড় জ্বালানি ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর আওতা বাড়িয়ে তাদের জন্য নির্দিষ্ট সাশ্রয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ

নতুন ভবনে বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী নকশা উৎসাহিত করতে ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন

জ্বালানি দক্ষতা প্রকল্পের পরিকল্পনা, অর্থায়ন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও বাস্তবায়ন তদারকির জন্য একটি বিশেষায়িত সুপার এনার্জি সার্ভিস কোম্পানি গঠন

স্বল্প সুদে অর্থায়নের সুযোগ নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজনে বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর সহায়তায় সহজ অর্থায়ন ব্যবস্থা গড়ে তোলা