গুলিবিদ্ধ ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থায়
এখনো কোনো দৃশ্যমান উন্নতি দেখা যায়নি। তার চিকিৎসায় গঠিত মাল্টিডিসিপ্লিনারি মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা জানিয়েছেন, বর্তমানে তার অবস্থা চিকিৎসাগতভাবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে এবং মস্তিষ্কের পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক।
রোববার সকালে মেডিকেল বোর্ডের জরুরি বৈঠক শেষে এক চিকিৎসক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) এ তথ্য জানান। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, বোর্ড মিটিংয়ের আগেই ওসমান হাদির পুনরায় সিটি স্ক্যান করা হয়। সর্বশেষ স্ক্যানে তার মস্তিষ্কে ব্যাপক ইডেমা বা পানি জমা এবং অক্সিজেনের ঘাটতির চিত্র পাওয়া গেছে, যা মস্তিষ্কের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি কিছু অংশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রক্ত জমাট বাঁধার আলামতও দেখা গেছে। এসব তথ্য বিবেচনায় তার ব্রেনের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ফুসফুসের অবস্থার ক্ষেত্রে আগের মতোই সংকট বজায় রয়েছে এবং বর্তমানে লাইফ সাপোর্টের সাহায্যে তার শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখা হয়েছে। তবে স্বস্তির দিক হলো—তার কিডনি স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে। প্রতিদিন প্রায় চার লিটার প্রস্রাব নিঃসরণের হিসাব অনুযায়ী ফ্লুইড ব্যালেন্স করা হচ্ছে।
চিকিৎসক আরও জানান, এর আগে রক্তক্ষরণ ও রক্ত জমাট বাঁধার ভারসাম্যহীনতা থেকে যে ডিআইসি (ডিসিমিনেটেড ইনট্রাভাসকুলার কোয়াগুলেশন) দেখা দিয়েছিল, সেটির অবস্থায় আপাতত কোনো পরিবর্তন হয়নি এবং নতুন করে কোনো জটিলতাও তৈরি হয়নি।
তবে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় এখনো তার মস্তিষ্ক। ব্রেন স্টেম ইনজুরি গুরুতর অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া অস্ত্রোপচার করা অংশের বিপরীত পাশে মস্তিষ্ক সামান্য বাইরে দিকে চাপ সৃষ্টি করছে বলেও লক্ষ্য করা গেছে, যা চিকিৎসকদের জন্য বাড়তি দুশ্চিন্তার কারণ।
বিদেশে উন্নত চিকিৎসার বিষয়ে চিকিৎসক জানান, এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। মেডিকেল বোর্ড একটি বিস্তারিত কেস সামারি প্রস্তুত করেছে। বিদেশের কোনো হাসপাতাল সেই কেস সামারি পর্যালোচনা করে রোগীকে গ্রহণে সম্মত হলে তবেই তাকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর বা অন্য কোনো দেশে নেওয়া হবে—এ বিষয়ে এখনই নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না। পাশাপাশি রোগীকে বিদেশে নেওয়ার মতো শারীরিক স্থিতিশীলতা রয়েছে কি না, সেটিও এখনো বড় প্রশ্ন হয়ে আছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: