হাদিকে গুলির ঘটনায় ফয়সালের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ, মোটরসাইকেল মালিক গ্রেপ্তার

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান এবং তার মালিকানাধীন আইটি প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাপল সফট আইটি লিমিটেড’-এর সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ফয়সাল করিম মাসুদ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর সদস্য বলেও জানা গেছে।

এদিকে হাদির ওপর গুলি চালানোর কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। রোববার তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়।

র‍্যাব-২ সূত্র জানায়, আব্দুল হান্নান মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকার বাসিন্দা হলেও তার স্থায়ী ঠিকানা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর। গ্রেপ্তার হান্নান গুলিবর্ষণের প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের পূর্বপরিচিত ব্যক্তি। বর্তমানে ফয়সাল পলাতক থাকায় তাকে খুঁজছে পুলিশ।

র‍্যাব-২-এর অধিনায়ক মো. খালিদুল হক হাওলাদার জানান, ঘটনার সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির নম্বর ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে শনাক্ত করা হয়। পরে বিআরটিএ অফিস থেকে যাচাই করে মোটরসাইকেলটির মালিক হিসেবে আব্দুল হান্নানের তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল হান্নান পরস্পরবিরোধী তথ্য দিয়েছেন। কখনো বলেছেন মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে দিয়েছেন, আবার কখনো দাবি করেছেন সেটি গ্যারেজে রাখা ছিল। তবে এসব দাবির পক্ষে তিনি কোনো বৈধ প্রমাণ দেখাতে পারেননি।

হান্নান দাবি করেছেন, প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সালকে চেনেন ঠিকই, তবে দীর্ঘদিন তাদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই। যদিও র‍্যাব কর্মকর্তাদের মতে, ফয়সাল ও হান্নানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া হান্নানের কোনো সুনির্দিষ্ট পেশাও পাওয়া যায়নি। তদন্তকারীদের ধারণা, তাকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করলে ফয়সালের অবস্থান ও হামলার পেছনের কারণ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে। এ কারণে তাকে ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাজধানীর পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল আরোহী এক আততায়ী শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে তিনি বর্তমানে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় এখনো সরাসরি হামলায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলেও, ব্যবহৃত মোটরসাইকেল শনাক্ত ও এর মালিককে আটক করাকে তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।