আজ ১ ডিসেম্বর। বাঙালির ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল, আবেগে
ভরা, শোক–গাঁথা আর অহংকারের মাস—মহান বিজয়ের মাস—এভাবেই শুরু হলো। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, যা আমাদের রাজনৈতিক সংগ্রামের দীর্ঘ পথপরিক্রমায় সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন, সেই যুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় এসেছে এ মাসেই। টানা নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে জাতির বহু শতকের স্বপ্ন—স্বাধীন রাষ্ট্র, নিজস্ব পতাকা ও পরিচয়—অবশেষে বাস্তব রূপ পায় ডিসেম্বরেই।
১৬ ডিসেম্বর—বিজয়ের দিন
১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির জীবনে চূড়ান্ত মুক্তির সূর্য উদিত হয়েছিল। ওই দিন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতার পূর্ণতা লাভ করে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের যে ভিত্তি ১৯৫২ সাল থেকে গড়ে উঠেছিল, তার সম্পূর্ণতা আসে রক্ত, অশ্রু আর আত্মত্যাগে লেখা বিজয়ের মধ্য দিয়ে।
শোক ও গৌরবের মাস
বিজয়ের উল্লাসের পাশাপাশি ডিসেম্বর বাঙালির বেদনারও প্রতীক। স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছে অসংখ্য তরুণ-যুবক, আর মা-বোনেরা হয়েছেন অকথ্য নির্যাতনের শিকার। পাশাপাশি এই মাসেই পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা দেশের শ্রেষ্ঠ মেধাবী সন্তান—বুদ্ধিজীবীদের—পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে এমন বর্বরতার নজির পৃথিবীতে আর নেই।
পরাজয়ের মুখে পাকিস্তানি বাহিনী
১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ এবং ভারতীয় মিত্রবাহিনীসহ যৌথবাহিনীর স্থল, জল ও আকাশপথের সাঁড়াশি অভিযানে পাকিস্তানি হানাদাররা একের পর এক পরাজিত হতে থাকে।
অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়—এভাবেই জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ।
এসআর
মন্তব্য করুন: