সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে তৎকালীন মেজর ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান জাতীয় ইতিহাসে চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা বীর শহীদ, আহত যোদ্ধা ও সকল মুক্তিযোদ্ধার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, “তাদের ত্যাগের বিনিময়েই আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। সশস্ত্র বাহিনী দিবসের এ বিশেষ দিনটি সেই বীরত্বের স্মরণেই।
ড. ইউনূস বলেন, শিগগিরই দেশ নির্বাচনমুখী হচ্ছে, আর এই নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের পথে যাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে উঠবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণ, আনন্দমুখর ও উৎসবমুখর হয়—এ জন্য সবাই মিলে কাজ করতে হবে।
সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক উত্তরণে আসন্ন নির্বাচনে পেশাদারিত্ব, দক্ষতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।”
সময়ের বিভিন্ন সংকট–দুর্যোগে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান স্মরণ করে ইউনূস বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা থেকে শুরু করে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা—সব ক্ষেত্রেই তারা জনগণের আস্থার প্রতীক।
তিনি ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ও চলমান সংস্কার কার্যক্রমেও বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।
এসময় তিনি জানান, বাহিনীর আধুনিকায়ন, প্রশিক্ষণ উন্নয়ন ও প্রযুক্তি সংযোজনের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। আগের ‘ফ্যাসিস্ট আমলে’ এসব উন্নয়ন উপেক্ষিত ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধকে সংগঠিত করতে গঠিত ‘বাংলাদেশ ফোর্সেস’ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ১১ সেক্টরে প্রশিক্ষণ চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় ২১ নভেম্বর সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর যৌথ অভিযানে মুক্তিযুদ্ধ নতুন গতি পায় এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয় ১৬ ডিসেম্বর।
“একাত্তরের সশস্ত্র বাহিনীর সেই অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরদিন উজ্জ্বল হয়ে থাকবে,” মন্তব্য করেন তিনি।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবদান উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, গত ৩৭ বছরে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা ৪৩টি দেশে ৬৩টি মিশন সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে ১০টি মিশনে দায়িত্ব পালন করছেন তারা। নারী শান্তিরক্ষী প্রেরণেও বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ দেশ।
তিনি বলেন, “বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ এখন একটি নির্ভরযোগ্য ও মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্র”—এ জন্য তিনি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “এই দিবস আমাদের গৌরব, আমাদের ইতিহাস এবং আমাদের অঙ্গীকারের প্রতীক।
এসআর
মন্তব্য করুন: