[email protected] বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম

অন্তর্বর্তী সরকার কয়েক দশকের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০২৫ ১:১০ পিএম

অন্তর্বর্তী সরকার গত কয়েক দশকের মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী

সরকারগুলোর একটি— এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তার মতে, এই সরকার তাদের প্রায় সব লক্ষ্যই সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি এসব বক্তব্য তুলে ধরেন।

পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন—

‘এই সরকারের নেতাদের অনেকেই ভীত বা অদক্ষ ভেবে সমালোচনা করেছেন অনেকে। বলা হয়েছে— তারা রাস্তায় বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ, অথচ এই সময়ে ৫০০ দিনে ১ হাজার ৭০০টির বেশি বিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছে! তাদের নতুন বা অভিজ্ঞতাহীন আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে— তারা আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগে বারবার বাধার মুখে পড়েছে। আবার অভিযোগ উঠেছে, ছোট ও তুলনামূলক অখ্যাত গোষ্ঠীর চাপের কাছে সরকার নতি স্বীকার করছে!’

তিনি আরও লিখেন—

‘গত ১৫ মাসে এই সরকারকে নিষ্ক্রিয়, ব্যর্থ ও অযোগ্য হিসেবে উপহাস করা হয়েছে। কেউ কেউ আবার রসিকতার ছলে বলেছেন— এটি যেন “কিছু না করা, শুধু আরামে থাকা” ধরনের একটি দল— যারা কাকতালীয়ভাবে ক্ষমতায় এসেছে, তেমন কিছু করতে পারেনি এবং এখন সম্মানজনক প্রস্থানের পথ খুঁজছে।’

তবুও শফিকুল আলমের দাবি—

‘পেছনে ফিরে তাকালে আমি নির্দ্বিধায় বলি— এই অন্তর্বর্তী সরকারই গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সরকার। তারা তাদের প্রায় সব লক্ষ্যই বাস্তবে রূপ দিয়েছে।’

তিনি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যগুলো এভাবে তুলে ধরেন—

প্রধান অর্জনসমূহ

দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বিপ্লব-পরবর্তী প্রতিশোধমূলক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কসংক্রান্ত চুক্তি কোনো লবিং ফার্ম ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে।

১৫ মাসে রেকর্ড সংখ্যক আইন পাস, যার মধ্যে বিস্তৃত শ্রম সংস্কার আইন রয়েছে।

জুলাই ঘোষণা ও জুলাই চার্টার বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কাঠামো গঠনে নতুন ভিত্তি তৈরি করেছে।

সুপ্রিম কোর্ট এখন নিম্ন আদালতকে তদারকি করছে, ফলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা ও জামিন ব্যবহারের সুযোগ কমেছে।

লালদিয়া টার্মিনাল চুক্তি বিশ্বের শীর্ষ বন্দর অপারেটরদের বিনিয়োগ এনেছে— যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ইউরোপীয় বিনিয়োগ।

নতুন পররাষ্ট্রনীতি কাঠামো বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে এনেছে।

অর্থনীতি স্থিতিশীল হয়েছে, প্রবৃদ্ধির ধারা ফিরেছে।

ব্যাংকিং খাতের অপব্যবহার কমেছে, মুদ্রা স্থিতিশীল এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪% থেকে কমে ৭%-এ নেমেছে।

অতীতের দমন-পীড়নের জন্য জবাবদিহিতা শুরু হয়েছে, এবং দীর্ঘদিনের বিচারহীনতার অবসান ঘটছে— শেখ হাসিনাকেও আইনের সামনে জবাবদিহি করতে হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

গুমের ঘটনা বন্ধ হয়েছে, বিএএল-এর সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে, এবং একটি নতুন সাংস্কৃতিক জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে— যা সাম্প্রতিক প্রামাণ্যচিত্রগুলোতেও প্রতিফলিত। তিনি এটিকে “ফারুকি-ইফেক্ট” হিসেবে উল্লেখ করেন।

র‍্যাব এখন আইনের অধীনে পরিচালিত, গোয়েন্দা সংস্থারাও ভিন্নমত দমনে আগ্রাসন থেকে সরে এসেছে।

গণমাধ্যম ও বাকস্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে; বিগত ১৬ মাসে একটিও সাজানো ক্রসফায়ারের অভিযোগ আসেনি।


শেষে তিনি লিখেন—

‘বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি— এত কম সময়ে কোনো সরকার এত বিস্তৃত ও গভীর সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পারেনি। মাত্র ১৫ মাসেই অন্তর্বর্তী সরকার তা করে দেখিয়েছে।’

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর