[email protected] বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

‘হাসিনার বিরুদ্ধে রায় প্রমাণ করে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ - প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ১০:৩১ পিএম

সংগৃহীত ছবি

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আদালতের দণ্ডাদেশ প্রমাণ করেছে যে ক্ষমতার অবস্থান যাই হোক, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়—এ মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, “আজ বাংলাদেশের আদালত যে স্পষ্ট ভাষায় রায় দিয়েছে, তা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বৈশ্বিক পরিসরেও প্রতিধ্বনিত হয়েছে। জুলাই-আগস্ট ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষের জন্য এই রায় পর্যাপ্ত না হলেও ন্যায়বিচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিফলন।”

তিনি জানান, দেশ এখন দীর্ঘ দমন–পীড়নের পর গণতান্ত্রিক ভিত্তি পুনর্গঠনের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। নিরস্ত্র তরুণ–তরুণী ও শিশুদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগ শুধু আইনের লঙ্ঘনই নয়, বরং রাষ্ট্র ও নাগরিকের মধ্যকার আস্থার কাঠামোকেও চূর্ণ করে দিয়েছিল।

ড. ইউনূস বলেন, “প্রায় ১,৪০০ জনের প্রাণহানির ঘটনা বাংলাদেশের মৌলিক মূল্যবোধ, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকারে গভীর আঘাত এনেছিল। তারা কেবল সংখ্যা ছিলেন না—ছিলেন ছাত্র-ছাত্রী, বাবা-মা ও অধিকারসম্পন্ন নাগরিক।”

তিনি আরও জানান, আদালতে মাসের পর মাসের সাক্ষ্য–প্রমাণে উঠে এসেছে কীভাবে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালানো হয়েছিল। “আজকের রায় তাদের দুর্ভোগকে স্বীকৃতি দেয় এবং নিশ্চিত করে—ন্যায়বিচারের প্রশ্নে কোনো ছাড় নেই।”

ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক জবাবদিহির মূল স্রোতে পুনরায় যুক্ত হচ্ছে। পরিবর্তনের দাবিতে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের ত্যাগই আগামীর পথ তৈরি করছে।

তিনি বলেন, “শুধু আইনি জবাবদিহি নয়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকের মধ্যে আস্থা পুনর্গঠনও জরুরি। কেন মানুষ সত্যিকারের প্রতিনিধিত্বের জন্য সবকিছু ঝুঁকিতে ফেলতে প্রস্তুত হয়েছিল—এখন তা বুঝে সেই আস্থার উপযোগী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।”

তার মতে, আজকের রায় সেই যাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি আস্থা প্রকাশ করে বলেন, “বাংলাদেশ সাহস ও বিনয়ের সঙ্গে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে। আইনের শাসন, মানবাধিকার ও প্রতিটি মানুষের সম্ভাবনার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকলে ন্যায়বিচার শুধু টিকেই থাকবে না—বিজয়ী হবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায়

  • ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এক অভিযোগে ফাঁসি, অন্য অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড,
  • সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফাঁসি,
  • এবং রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর