অন্যদিকে সরকার বিচার বিভাগকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করিতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের লক্ষ্যে ৮ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। কমিশনের প্রধান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান।
রাষ্ট্র সংস্কারে পাঁচটি কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
কমিশনগুলোর প্রধান আগে নির্ধারণ করা হলেও বৃহস্পতিবার রাতে সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত পাঁচটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ড. বদিউল আলম মজুমদারকে নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচারপতি শাহ আবু নাইমকে বিচার বিভাগ, সফর রাজ হোসেনকে পুলিশ সংস্কার, ড. ইফতেখারুজ্জামানকে দুর্নীতি দমন এবং আব্দুল মুয়িদ চৌধুরীকে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয়েছে।
জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৯ সদস্যের পুলিশ সংস্কারে কমিশন গঠন করেছে সরকার।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইকবাল, সাবেক বিভাগীয় কমিশনার ও যুগ্মসচিব মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ সাজ্জাদ আলী এবং ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ মো. গোলাম রসুল এই কমিশনের সদস্য।
এছাড়া ৮ সদস্যের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিদ্যমান নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে জনপ্রতিনিধিত্বশীল ও কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে কমিশন গঠন করা হয়েছে।
এই কমিশনের প্রধান সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ও নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম সুজন। এছাড়া সদস্য করা হয়েছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদ ড. তোফায়েল আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচন ব্যবস্থা, ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিশেষজ্ঞ জেসমিন টুলী, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও ওপিনিয়ন মেকার ড. জাহেদ-উর রহমান, শাসন প্রক্রিয়া ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বিশেষজ্ঞ মীর নাদিয়া নিভিন, ইলেকট্রনিক ভোটিং ও ব্লকচেইন বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ সাদেক ফেরদৌস ও একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধিকে।
অন্যদিকে সরকার বিচার বিভাগকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করিতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের লক্ষ্যে ৮ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। কমিশনের প্রধান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান।
বিদ্যমান দুর্নীতি দমন কমিশনকে কার্যকর, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়িয়া তুলিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাবনার লক্ষ্যে ‘দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন’ নামে কমিশন গঠন করা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
সদস্য সাবেক কম্পট্রোলার ও অডিটর জেনারেল মাসুদ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধ্যাপক মোস্তাক খান, সোয়াস, বার-এট-ল মাহদীন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন ও একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি। জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়িয়া তুলবার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন’ গঠন করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। কমিশনের সদস্য সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ তারেক, ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মো: মোখলেস উর রহমান, সবে অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব ড. রিজওয়ান খায়ের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএ ফিরোজ আহমেদ ও একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এসব কমিশন ৩ অক্টোবর থেকে কার্যক্রম শুরু করবে এবং সংশ্লিষ্ট সকল মতামত বিবেচনা করে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিকট হস্তান্তর করতে হবে। কমিশনের কার্যালয় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হবে।
কমিশনের প্রধান ও সদস্যরা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সরকারি পদমর্যাদা, বেতন/সম্মানী ও সুযোগ-সুবিধা পাইবেন; তবে শর্ত থাকে যে, কমিশন প্রধান বা কোন সদস্য অবৈতনিক হিসাবে দায়িত্ব পালন করিতে চাইলে বা সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করিতে না চাইলে তাহা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অনুমোদন করতে পারবেন।
সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/সংস্থা কমিশনের চাহিদানুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহসহ সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে।কমিশন প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যক্তিকে কমিশনের সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করিতে পারবে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিভাগ কমিশনগুলোকে সচিবিক সহায়তা প্রদান করবে। এর আগে ১২ সেপ্টেম্বর সরকার ৬টি কমিশন গঠনের ঘোষণা দেয়।
৬টি কমিশন গঠনের ঘোষণা দেয়।
এ বিষয়ে গতকাল সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. শফিকুল আলম বলেন, সরকার যে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে তারমধ্যে ৫ টি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
একটি কমিশনের দু’একজন সদস্য এখনো চূড়ান্ত করা যায়নি। চূড়ান্ত করতে আরো দু’একদিন সময় লাগতে পারে। চূড়ান্ত হলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: