জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণাকে ঘিরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার–এর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ রায়ের তারিখ ঘোষণা করবেন। দিনটি ঘিরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনাল চত্বর ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন রয়েছে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। ট্রাইব্যুনাল এলাকায় তিনস্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। প্রবেশপথে তল্লাশি শেষে সাংবাদিক ও দর্শনার্থীদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রায় ঘোষণার দিন যেন কেউ উসকানিমূলক কার্যকলাপ বা নাশকতা ঘটাতে না পারে, সে লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে সর্বাত্মক প্রস্তুতি। নিরাপত্তা এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে আদালতের কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।
সকালে হাইকোর্ট মাজার–সংলগ্ন ট্রাইব্যুনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিজিবি, ডিএমপি ও এপিবিএন সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। বিজিবি ও পুলিশের সাঁজোয়া যান মোতায়েন রয়েছে, পাশাপাশি সেনাবাহিনীর টহল দলও সেখানে দায়িত্ব পালন করছে।
ডিএমপির তথ্য অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনাল ও এর আশপাশসহ ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় প্রায় ১৭ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর বাইরে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের অন্যান্য ইউনিটও সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
এদিকে, রায়ের তারিখ ঘোষণার আগে থেকেই রাজধানীতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বুধবার থেকেই ঢাকায় প্রবেশপথগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়ে গণপরিবহণ ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি চালানো হচ্ছে। গত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন হোটেল ও মেসে তল্লাশি অভিযানও পরিচালনা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীর সামগ্রিক পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে শান্ত রয়েছে। তবে সড়কে যানবাহনের সংখ্যা স্বাভাবিক দিনের তুলনায় কিছুটা কম। বাংলামোটর, শাহবাগ, হাইকোর্ট এলাকা ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে পুলিশের টহল ও চেকপোস্ট দেখা গেছে। যমুনা ভবনের দিকে যাতায়াত সাময়িকভাবে সীমিত রাখা হয়েছে এবং যানবাহনগুলোকে বিকল্প রুটে পাঠানো হচ্ছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: