[email protected] শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫
২৩ কার্তিক ১৪৩২

কমিশনের মোট ব্যয় ১ কোটি ৭১ লাখ, আপ্যায়ন খাতে ব্যয় ৪৫ লাখ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৭ নভেম্বর ২০২৫ ৮:২১ এএম

সাম্প্রতিক সময়ে কিছু গোষ্ঠী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচার করছে যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নাকি

আপ্যায়নের খাতে ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিকর এবং পরিকল্পিত অপপ্রচার ছাড়া আর কিছুই নয়।

এই গোষ্ঠীগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে কমিশনের দপ্তরের সঙ্গে কোনো তথ্য যাচাই করেনি কিংবা দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তার বক্তব্যও নেয়নি। ফলে বিষয়টি যে সম্পূর্ণ মিথ্যা, তা সহজেই প্রমাণিত।

জনগণের ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে— ২০২৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছর মিলিয়ে কমিশনের মোট অনুমোদিত বাজেট ছিল ৭ কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার ২৬ টাকা। এর মধ্যে ৩১ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত বাস্তবায়িত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ১২৬ টাকা, যা মোট বরাদ্দের প্রায় ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

এই বাজেটের মধ্যে আপ্যায়ন খাতে নির্ধারিত ছিল ৬৩ লাখ টাকা; এর বিপরীতে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬৮৫ টাকা ব্যয় হয়েছে— যার অধিকাংশ ব্যয় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক এবং কমিশনের বিভিন্ন সভায় অতিথি আপ্যায়নে ব্যবহৃত হয়েছে।

প্রথম পর্যায়ে (২০ মার্চ–১৯ মে ২০২৫) ৪৪টি বৈঠকে খরচ হয় ৪ লাখ ৯১ হাজার টাকা।

দ্বিতীয় পর্যায়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ২৩টি বৈঠকে (৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়) ব্যয় হয় ২৮ লাখ ৮৩ হাজার ১০০ টাকা— প্রতিদিনের গড় ব্যয় ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকারও কম।

তৃতীয় পর্যায়ে ৭টি সভায় ৩০টি দলের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে ব্যয় হয় ৭ লাখ ৮ হাজার ৬০০ টাকা।


এ ছাড়া কমিশনের ৫০টি অভ্যন্তরীণ সভার খরচ ছিল ১ লাখ ৫ হাজার ৫২০ টাকা এবং নাগরিক সমাজ, পেশাজীবী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে ১৩টি বৈঠক ও সংবাদ সম্মেলনে ব্যয় হয় ২ লাখ ৩৪০ টাকা।

বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ১৩টি বৈঠকের আপ্যায়ন খরচ ছিল মাত্র ৩০ হাজার ৯৬০ টাকা— যেখানে কোনো বিশেষজ্ঞ কোনো পারিশ্রমিক বা সম্মানী নেননি।

অতিথি আপ্যায়নের জন্য ৯ মাসে অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে মাত্র ২ লাখ টাকা; এতে দেশি-বিদেশি কূটনীতিক, রাজনৈতিক দলের নেতা, সাংবাদিক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ছিলেন।

উল্লিখিত সমস্ত পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যে ৮৩ কোটি টাকার অপপ্রচারণা সম্পূর্ণ মনগড়া ও অসত্য। এটি মূলত কমিশনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা।

কমিশন তার দায়িত্ব পালনে শুরু থেকেই পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রেখেছে। সংবাদকর্মীরা অবাধে কমিশন কার্যালয়ে প্রবেশ করে তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছেন, আর সহসভাপতি ও সদস্যরা নিয়মিতভাবে সংবাদ সম্মেলন ও ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তথ্য প্রকাশ করেছেন। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের আলোচনাগুলো সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়েছে।

কমিশন আশা করছে, যারা অসৎ উদ্দেশ্যে এই অপপ্রচার চালাচ্ছেন তারা দ্রুত তাদের ভুল স্বীকার করে জনসম্মুখে ক্ষমা চাইবেন। পাশাপাশি দায়িত্বশীল গণমাধ্যমসমূহও সত্য ও যাচাইকৃত তথ্য প্রচার করে জনগণকে বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত রাখবে।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর